আহমদ শফীর অন্তরে জাগরণের পিদিম জ্বালিয়ে ছিলেন হোসাইন আহমদ মাদানী

 

আহমদ শফীর অন্তরে জাগরণের পিদিম জ্বালিয়ে ছিলেন হোসাইন আহমদ মাদানী

আহমদ শফীর অন্তরে জাগরণের পিদিম জ্বালিয়ে ছিলেন হোসাইন আহমদ মাদানী

  প্রেমময়ও প্রেমকানন মাটির পৃথিবী।  আমাদের প্রভু রাব্বানা এখানে রঙ, ছন্দ এবং গন্ধে আনন্দিত।  তিনি এখানে আঁকেন।  গঠিত হত্তয়া.  আমাদের জীবন ছন্দে প্রবাহিত হয়।

  ছন্দ পড়লে সাং এখানে মেলা।  এই বসুন্ধরা যাকে প্রভু ভালবাসেন তাকে অমর করে রাখেন।  আল্লামা শাহ আহমদ শফী আল্লাহর  সেই প্রিয় বান্দাদের মধ্যে অন্যতম, যাদের মৃত্যুতে সমগ্র মুসলিম বিশ্ব শোকাহত।

  তার মৃত্যুর খবর শুনে কেঁদে উঠেনি!  হায় হায় আফসোস!  তিনি ছিলেন ওলিকুলের সম্রাট।  তিনি একজন উজ্জ্বল আলেম ছিলেন।  তিনি ছিলেন একজন ইসলামী আইনবিদ।  যুগই ছিলেন সেরা মুহাদ্দিদ।  তিনি ছিলেন সমসাময়িক মুসলিম বিশ্বের অবিসংবাদিত নেতা।  সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতার দিক দিয়ে তিনি এক অনন্য উচ্চতায় ছিলেন।

  1930 সালে ভোরের দিকে একটি কাক ডেকেছিল আল্লাহর  সিংহাসন অলৌকিক সৃষ্টির সুরে নেচে উঠল।  উত্তপ্ত পৃথিবীর শুকনো প্রকৃতি প্রাণবন্ত এবং সতেজ হয়ে ওঠে।  মুহাম্মদ সাঃ গাব্রিয়েলের হাতে বাঁশি বাজানো সুরটি - ‘ইকরা বিসমি রাব্বিকাল্লাজি খালাক / খালাকাল ইনসানা মিন আলাক’।

  সেই ভালোবাসার সুরটি আজ বাংলাদেশের সবুজ ভূখণ্ডে গানে।  ইসলামের রাঙ্গাদুলাল আহমদ শফী ইসলামাবাদের (চট্টগ্রাম) রাঙ্গুনিয়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

  তিনি পখিয়ার্তিলা নামে একটি অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।  মা মোসাম্মত মেহেরুন্নেসার কোলে বসে বাবা বরকত আলীর কানে আজান বয়ে যাওয়ার শব্দটি ভবিষ্যতের নীতি ও পদ্ধতি বুঝতে পেরেছিল।

  শৈশব থেকেই কুরআন শিক্ষার জন্য তাকে মৌলভী আজিজুর রহমানের কাছে ভর্তি করা হয়েছিল।  কুরআন শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি আহমদ শফী তার মাতৃভাষার নিয়মিত অনুশীলনও শুরু করেছিলেন।  তিনি চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা পড়াশোনা করেছেন।

  তারপরে তিনি শরফভাটা মাদ্রাসায় প্রাথমিক পাঠের দিকে মনোনিবেশ করেন।  খুব অল্প বয়সেই মহান প্রতিভাধর ব্যক্তি আহমদ শফি কোরআন তেলাওয়াত ও প্রাথমিক শিক্ষায় সাফল্য অর্জন করেছিলেন।

  চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জামিয়া ইসলামিয়া জিরি মাদ্রাসায় ভর্তি হন তিনি।  তিনি সেখানে  ৬ মাস পড়াশোনা করেছেন।  দশ বছর বয়সে তিনি দারুল উলূম মুইনুল ইসলামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় ভর্তি হন।

  হাটহাজারী মাদ্রাসায় পড়াশোনা শেষ করার পরে তিনি উচ্চতর পড়াশুনা করার জন্য ১৯৪১ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের দারুল উলূম দেওবন্দে চলে যান।

  সেখানেই ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের প্রবর্তক মাওলানা সাইয়্যেদ হোসেন আহমদ মাদানী তাঁর হৃদয়ে বিপ্লব ও জাগরণের চেতনাকে আলোকিত করেছিলেন।  সময়ের সাথে সাথে এই পিডিম একদিন শিখার মতো ছড়িয়ে পড়ে এবং সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।

  তিনি মাওলানা মাদানীর কাছ থেকে অঙ্গীকার নিয়েছিলেন।  তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছেন।  তিনি তাঁর কাছ থেকে হাদীস, ফিকহ ও আধ্যাত্মিক সনদ গ্রহণ করেছিলেন।  যতদিন তিনি বেঁচে ছিলেন, আহমদ শফী মাদানীর আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি।

  তিনি বিপ্লব ও জাগরণের গানগুলি গেয়েছিলেন যা তিনি দেওবন্দে মাদানির হাতে নিয়েছিলেন।

  এই কিংবদন্তি আদর্শিক বিপ্লবের একটি মডেল উপস্থাপন করে ইতিহাসের নায়ক হয়ে উঠেছে।  ঐক্য ও সংহতির নজিরবিহীন উদাহরণ ভুলে যাওয়ার নয়, জাতি কখনই ভুলতে পারে না।

  দেওবন্দে পাঠ শেষ করার পর ১৯৪৮ সালে তিনি দারুল উলূম হাটহাজারীতে হুসেন আহমদ মাদানীর প্রতিনিধিত্বকারী শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন।  তিনি 1986 সালে মহাপরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।

  শেষ দিন অবধি আল্লামা শফী হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক ও শায়খুল হাদিসের পাশাপাশি হিফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির, বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বেফাক এবং আল হায়াতুল উলিয়া লিল জামিয়াতুল কাওমিয়া বাংলাদেশের দায়িত্ব পালন করেন।

0 Comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন