কোরআনের ফযিলত লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
কোরআনের ফযিলত লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

সুরা এখলাছ এর গুরত্ত ও তাৎপর্যয়। যে সুরায় আল্লাহ্‌র একত্তবাদ প্রকাশ পায় ।

 
সুরা এখলাছ এর গুরত্ত ও তাৎপর্যয়। যে সুরায় আল্লাহ্‌র একত্তবাদ প্রকাশ পায় ।

সুরা এখলাছ এর গুরত্ত ও তাৎপর্যয়। যে সুরায় আল্লাহ্‌র একত্তবাদ প্রকাশ পায় ।

قُلۡ ہُوَ  اللّٰہُ  اَحَدٌ  ۚ﴿۱﴾
বল, তিনি আল্লাহ, এক অদ্বিতীয়, মুসনাদে আহমদে হযরত উবাই ইবনে কা'ব (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, মুশরিকরা নবী করীম (সঃ) কে বললোঃ “হে মুহাম্মদ (সঃ)! আমাদের সামনে তোমার প্রতিপালকের গুণাবলী বর্ণনা কর।" তখন আল্লাহ তা'আলা (আরবি) এ সূরাটি শেষ পর্যন্ত অবতীর্ণ করেন। (আরবি) শব্দের অর্থ হলো যিনি সৃষ্ট হননি। এবং যার সন্তান সন্ততি নেই। কেননা, যে সৃষ্ট হয়েছে সে এক সময় মৃত্যুবরণ করবে এবং অন্যেরা তার উত্তরাধিকারী হবে। আর আল্লাহ তা'আলা মৃত্যুবরণও করবেন না এবং তাঁর কোন উত্তরাধিকারীও হবে না।

 তিনি কারো সন্তান নন এবং তার সমতুল্য কেউই নেই। (ইমাম তিরমিযী (রঃ), ইমাম ইবনে জারীর (রঃ) ইমাম ইবনে আবী হাতিমও (রঃ) এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী (রঃ) এটাকে সহীহ বলেছেন) হযরত জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, একজন বেদুইন নবী করিমের (সঃ) নিকট এসে বলেঃ “আমার সামনে আপনার প্রতিপালকের গুণাবলী বর্ণনা করুন!” তখন আল্লাহ তাআলা (আরবি) সূরাটি অবতীর্ণ করেন। [এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন হাফিয আবু ইয়ালা মুসিলী (রঃ)] অন্য এক রিওয়াইয়াতে আছে যে, কুরায়েশদের প্রশ্নের জবাবে আল্লাহ তা'আলা এ সূরাটি নাযিল করেন।

 হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “প্রত্যেক জিনিষেরই নিসবত বা সম্বন্ধ রয়েছে, আল্লাহর নিসবত হলো(আরবি) এবং তাকেই বলা হয় যিনি অন্তসারশূণ্য নন।” (এ হাদীসটি ইমাম তিবরানী (রঃ) বর্ণনা করেছেন) সহীহ বুখারীর কিতাবুত তাওহীদে নবী করীম (সঃ)-এর সহধর্মিনী হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, আল্লাহর নবী (সঃ) একটি লোকের নেতৃত্বে একদল সেনাবাহিনী প্রেরণ করেন। তারা ফিরে এসে নবী করীম (সঃ) কে বললেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! যাকে আপনি আমাদের নেতা মনোনীত করেছেন তিনি প্রত্যেক নামাযে কিরআতের শেষে।(আরবি) সূরাটি পাঠ করতেন।

” নবী করীম (সঃ) তাদেরকে বললেনঃ “সে কেন এরূপ করতো তা তোমরা তাকে জিজ্ঞেস কর তো?” তাকে জিজ্ঞেস করা হলে উত্তরে তিনি বলেনঃ “এ সূরায় আল্লাহর রাহমানুর রাহীমের গুণাবলী বর্ণনা করা হয়েছে, এ কারণে এ সূরা পড়তে আমি খুব ভালবাসি।" এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেনঃ “তাকে জানিয়ে দাও যে, আল্লাহও তাকে ভালবাসেন।” সহীহ বুখারীর কিতাবুস সলাতে হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, একজন আনসারী মসজিদে কুবার ইমাম ছিলেন। তাঁর অভ্যাস ছিল যে, তিনি সূরা ফাতিহা পাঠ করার পরই সূরা ইখলাস পাঠ করতেন। তারপর কুরআনের অন্য অংশ পছন্দমত পড়তেন।
If you want to read the Latest English News, click here:

 একদিন মুক্তাদী তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ “আপনি সূরা ইখলাস পাঠ করেন, তারপর অন্য সূরাও এর সাথে মিলিয়ে দেন, কি ব্যাপার? হয় শুধু সূরা ইখলাস পড়ুন অথবা এটা ছেড়ে দিয়ে অন্য সূরা পড়ুন।” আনসারী জবাব দিলেনঃ “আমি যেমন করছি তেমনি করবো, তোমাদের ইচ্ছা হলে আমাকে ইমাম হিসেবে রাখখা, না হলে বলো, আমি তোমাদের ইমামতি ছেড়ে দিচ্ছি।” মুসল্লীরা দেখলেন যে, এটা মুশকিল ব্যাপার! কারণ উপস্থিত সকলের মধ্যে তিনিই ছিলেন ইমামতির সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি। তাই তার বিদ্যমানতায় তারা অন্য কারো ইমামতি মেনে নিতে পারলেন না (সুতরাং তিনিই ইমাম থেকে গেলেন)। 

একদিন রাসুলুল্লাহ (সঃ) সেখানে গমন করলে মুসল্লীরা তাঁর কাছে এ ঘটনা ব্যক্ত করলেন। তিনি তখন ঐ ইমামকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেনঃ “তুমি মুসল্লীদের কথা মানো না কেন? প্রত্যেক রাকআতে সূরা ইখলাস পড় কেন?” ইমাম সাহেব উত্তরে বললেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! এ সূরার প্রতি আমার বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে।” তার একথা শুনে রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁকে বললেনঃ “এ সূরার প্রতি তোমার আসক্তি ও ভালবাসা তোমাকে জান্নাতে পৌছিয়ে দিয়েছে।

” মুসনাদে আহমদে ও জামে তিরমিযীতে হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, একটি লোক এসে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বললেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমি (আরবি) এই সূরাটিকে ভালবাসি।” তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁকে বললেনঃ “ তোমার এ ভালবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবিষ্ট করবে।” সহীহ বুখারীতে হযরত আবূ সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, একটি লোক অন্য একটি লোককে রাত্রিকালে বারবার (আরবি) এ সূরাটি পড়তে শুনে সকালে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট এসে এ ঘটনাটি বর্ণনা করেন। লোকটি সম্ভবতঃ ঐ লোকটির এ সূরা পাঠকে হালকা সওয়াবের কাজ মনে করেছিলেন। 
If you want to read the Home Based Business News, clickhere:

রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁকে বলেনঃ “যে সত্ত্বার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে তাঁর শপথ! এ সূরা কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল্য।” সহীহ বুখারীতে হযরত আবু সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) সাহাবীদেরকে বললেনঃ “ তোমরা প্রত্যেকেই কি কুরআনের এক তৃতীয়াংশ পাঠ করতে পারবে না?” সাহাবীদের কাছে এটা খুবই কষ্ট সাধ্য মনে হলো। তাই, তাঁরা বললেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমাদের মধ্যে কার এ ক্ষমতা আছে?” তখন রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাদেরকে বললেনঃ “জেনে রেখো যে, (আরবি) এ সূরাটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল্য।" মুসনাদে আহমদে হযরত আবু সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত কাতাদা ইবনে নু’মান (রাঃ) সারা রাত ধরে সুরা ইখলাস পড়তে থাকলেন। রাসুলুল্লাহ (সঃ) কে এটা জানানো হলে তিনি বললেন, “এ সুরা অর্ধেক কুরআন অথবা এক তৃতীয়াংশ কুরআনের সমতুল্য।

” মুসনাদে আহমদে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত আবু আইয়ুব আনসারী (রাঃ) এক মজলিসে ছিলেন। তিনি জনগণকে বলেন! “ তোমাদের মধ্যে কারো প্রত্যেক রাত্রে কুরআনের এক তৃতীয়াংশ পাঠের ক্ষমতা আছে কি?” তারা উত্তরে বললেনঃ “আমাদের মধ্যে কার এ ক্ষমতা থাকতে পারে?” তখন তিনি বললেনঃ “জেনে রেখো যে, (আরবি) সূরাটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশের (এর সমতূল্য)।" এমন সময় নবী করীম (সঃ) সেখানে এসে পড়লেন এবং হযরত আবু আইয়ুব (রাঃ) কে এ কথা বলতে শুনলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ “আবু আইয়ুব (রাঃ) সত্য কথাই বলেছে।

” জামে তিরমিযীতে হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) সাহাবীদেরকে বললেনঃ তোমরা সমবেত হও, আজ আমি তোমাদেরকে কুরআনের এক তৃতীয়াংশ শোনাবো।” সাহাবীগণ সমবেত হলেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) ঘর থেকে বের হয়ে এসে(আরবি) সূরাটি পাঠ করলেন। তারপর আবার ঘরে চলে গেলেন। সাহাবীরা তখন নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে লাগলেনঃ “রাসূলুল্লাহ (সঃ) তো আমাদেরকে কথা দিয়েছিলেন যে, আমাদেরকে কুরআনের এক তৃতীয়াংশ শোনাবেন, সম্ভবত আকাশ থেকে কোন অহী এসেছে।” এমন সময় রাসূলুল্লাহ (সঃ) বের হয়ে এসে বললেনঃ “আমি তোমাদেরকে কুরআনের এক তৃতীয়াংশ শোনানোর জন্যে কথা দিয়েছিলাম। 

জেনে রেখো যে, এই সূরাটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল্য।” হযরত আবুদ দারদার (রাঃ) বর্ণনায় রয়েছে যে, নবী করীম (সঃ) সাহাবীদের উদ্দেশ্যে বললেনঃ “তোমরা কি প্রতিদিন কুরআনের এক তৃতীয়াংশ তিলাওয়াত করতে অপারগ?” সাহাবীগণ আরয করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! এ ব্যাপারে আমরা খুবই দুর্বল এবং অক্ষম।” রাসূলুল্লাহ (সঃ) তখন বললেনঃ জেনে রেখো যে, আল্লাহ তাআলা কুরআনকে তিনভাগে বিভক্ত করেছেন। (আরবি) সূরাটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশ। (এ হাদীসটি ইমাম মুসলিম (রঃ) ও ইমাম নাসায়ী (রঃ) বর্ণনা করেছেন। এ ধরনের রিওয়াইয়াত সাহাবীদের একটি বড় জামাআত হতে বর্ণিত রয়েছে) হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, একবার রাসূলুল্লাহ (সঃ) কোথাও হতে তাশরীফ আনলেন, তাঁর সাথে হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) ছিলেন। 

রাসূলুল্লাহ (সঃ) একটি লোককে এ সূরাটি পাঠ করতে শুনে বললেনঃ “ওয়াজিব হয়ে গেছে।" হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! কি ওয়াজিব হয়ে গেছে?” তিনি উত্তরে বললেনঃ “জান্নাত (ওয়াজিব হয়ে গেছে)।” (এ হাদীসটি ইমাম তিরমিযী (রঃ) ও ইমাম নাসায়ী (রঃ) বর্ণনা করেছেন। ইমাম তিরমিযী (রঃ) এটাকে হাসান, সহীহ, গারীব বলেছেন) হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে বলতে শুনেছেনঃ “ তোমাদের মধ্যে কেউ কি রাত্রিকালে (আরবি) সূরাটি তিনবার পড়ার ক্ষমতা রাখে না? এ সূরা কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতূল্য। (এ হাদীসটি হাসিম আবু ইয়ালা মুসিলী (রঃ) বর্ণনা করেছেন। 

এর সনদ দুর্বল) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে হাবীব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি (তার পিতা) বলেনঃ “আমরা পিপাসার্ত ছিলাম, চারদিকে রাতের গভীর অন্ধকার, রাসূলুল্লাহ (সঃ) কখন অসিবেন এবং নামায। পড়াবেন আমরা তারই অপেক্ষা করছিলাম। রাসূলুল্লাহ (সঃ) এক সময় এলেন এবং আমার হাত ধরে বললেনঃ “পড়।” আমি নীরব থাকলাম। রাসূলুল্লাহ (সঃ) আবার বললেনঃ “পড়।” আমি বললামঃ কি পড়বো? তিনি বললেনঃ “প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যায় তিনবার সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়বে। প্রতিদিন তোমার জন্যে দুই বারই যথেষ্ট।” (এ হাদীস আবদুল্লাহ ইবনে ইমাম আহমদ (রঃ), ইমাম আবু দাউদ (রঃ) ও ইমাম নাসায়ী (রঃ) বর্ণনা করেছেন) সুনানে নাসাঈর একটি রিওয়াইয়াতে রয়েছেঃ “এ তিনটি সূরা পাঠ করলে এগুলো তোমাকে প্রত্যেক জিনিষ হতে রক্ষা করবে।

” মুসনাদে আহমদে হযরত তামীম দারী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি নিম্নলিখিত কালেমা দশবার পাঠ করবে সে চল্লিশ লাখ পূণ্য লাভ করবে। (আরবি) অর্থাৎ “আল্লাহ ছাড়া কোন মা'বুদ নেই, তিনি এক একক, অভাবমুক্ত, তিনি স্ত্রীও গ্রহণ করেননি, সন্তানও না (অর্থাৎ তাঁর স্ত্রীও নেই, সন্তানও নেই) এবং তাঁর সমতুল্য কেউই নেই।” (হাদীসের একজন বর্ণনাকারী খলীল ইবনে মুররাহ রয়েছেন। ইমাম বুখারী (রঃ) এবং অন্যান্য ইমাম তাঁকে খুবই দুর্বল বলে উল্লেখ করেছেন) মুসনাদে আহমদে হযরত আনাস জুহনী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি শেষ পর্যন্ত পাঠ করবে আল্লাহ তা'আলা তার জন্যে জান্নাতে একটি প্রাসাদ তৈরি করবেন।

” এ কথা শুনে হযরত উমার (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! কেউ যদি আরো বেশী বার পাঠ করে?" উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সঃ)! বললেন:“আল্লাহ এর চেয়েও অধিক ও উত্তম প্রদানকারী (অর্থাৎ আল্লাহ পাক বেশীও দিতে পারবেন, তার কোনই অভাব নেই।)” হ্যরত সাঈদ ইবনে মুসাইয়াব (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী করীম (সঃ) বলেছেনঃ “যে(আরবি) সুরাটি দশবার পাঠ করবে আল্লাহ্ তার জন্যে জান্নাতে একটি প্রাসাদ তৈরি করবেন, যে বিশ বার করবে তার জন্যে তৈরি করবেন জান্নাতে দু'টি প্রাসাদ এবং যে ব্যক্তি ত্রিশবার পাঠ করবে তার জন্যে আল্লাহ্ তা'আলা জান্নাতে তিনটি প্রাসাদ তৈরি করবেন।

If you want to read the Fish Advice News, click here:


” তখন হযরত উমার (রাঃ) বললেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! যদি আমরা এর চেয়েও বেশী বার পড়ি?” উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেনঃ “আল্লাহ এর চেয়েও অধিকদাতা।” (এ হাদীসটি মুরসাল এবং উত্তম। দারিমী (রঃ) এটা বর্ণনা করেছেন) হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে পঞ্চাশবার, (আরবি) পাঠ করে আল্লাহ তা'আলা তার পঞ্চাশ বছরের গুনাহ মাফ করে দেন।" (এ হাদীসটি হাফিয আবু ইয়া’লা সৃসিলী (রঃ) বর্ণনা করেছেন। এর সনদ দুর্বল) হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে(আরবি) দিনে দুইশত বার পাঠ করে তার জন্যে আল্লাহ্ তা'আলা এক হাজার পাঁচশত পুণ্য লিখে থাকেন যদি তার উপর কোন ঋণ না থাকে।

 এটাও বর্ণনা করেছেন হাফিয আবু ইয়ালা সৃসিলী (রঃ)। এর সনদও দুর্বল। জামে তিরমিযীর একটি হাদীসে রয়েছে যে, যে ব্যক্তি প্রত্যহ দুইশত বার পাঠ করে তার পঞ্চাশ বছরের গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়, যদি সে ঋণগ্রস্ত না হয়।” জামে তিরমিযীর একটি গারীব বা দুর্বল হাদীসে রয়েছে যে, নবী করীম (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি ঘুমোবার জন্যে বিছানায় যায়, তারপর ডান পাশ ফিরে শয়ন করতঃ একশতবার(আরবি) পাঠ করে তাকে কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তা'আলা বলবেনঃ “হে আমার বান্দা! তোমার ডান দিক দিয়ে জান্নাতে চলে যাও।” হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি দুইশত বার। 

পাঠ করে তার দুইশত বছরের পাপ মিটিয়ে দেয়া হয়।” (এ হাদীসটি আবু বকর বার (রঃ) বর্ণনা করেছেন) সুনানে নাসায়ীতে এই সূরার তাফসীরে হযরত বারীদাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি রাসূলুল্লাহ্ (সঃ)-এর সাথে মসজিদে প্রবেশ কালে দেখেন যে, একটি লোক নামায পড়ছে এবং নিম্নলিখিত দুআ করছেঃ (আরবি) অর্থাৎ “হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে এ সাক্ষ্যসহ আবেদন করছি যে, আপনি ছাড়া কোন মাবুদ নেই, আপনি এক ও অদ্বিতীয়, আপনি কারো মুখাপেক্ষী নন, আপনি এমন সত্ত্বা যার কোন সন্তান নেই এবং তিনিও কারো সন্তান নন এবং যার সমতুল্য কেউ নেই।” তখন রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) বললেনঃ “যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে সেই সত্তার শপথ! এ ব্যক্তি ইসমে আযমের সাথে দু'আ করেছে। আল্লাহর এই মহান নামের সাথে তার কাছে কিছু যাঞ্চা করলে তিনি তা দান করেন এবং এই নামের সাথে দু’আ করলে তিনি তা কবুল করে থাকেন।

If you want to read the Relationship advice News, click here:


” (এ হাদীসটি ইমাম নাসায়ী (রঃ) ছাড়াও অন্যান্য আসহাবে সুনানও বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী (রঃ) এটাকে হাসান গারীব বলেছেন) হযরত জাবির ইবনে আবদিল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “তিনটি কাজ এমন রয়েছে যে, যে ব্যক্তি এগুলো সম্পাদন করে সে জান্নাতের দরজাগুলোর যে কোন দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে এবং জান্নাতের যে কোন হ্যারের সাথে ইচ্ছা বিবাহিত হতে পারবে। (এক) যে ব্যক্তি তার হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেয়, (দুই) নিজের গোপনীয় ঋণ পরিশোধ করে এবং (তিন) প্রত্যেক ফরয নামাযের পরে দশবার (আরবি) সূরাটি পাঠ করে।” তখন হযরত আবু বকর (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, “হে আল্লাহর রাসুল (সঃ)! এ তিনটি কাজের যে কোন একটি যদি কেউ করে?” উত্তরে রাসুলুল্লাহ (সঃ) বললেনঃ “একটি করলেও একই রকম সম্মান সে লাভ করবে।” (এ হাদীসটি হাফিয আবু ইয়ালা মুসিলী (রঃ) বর্ণনা করেছেন) হযরত জারীর ইবনে আবদিল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি তার ঘরে প্রবেশের সময়।

(আরবি) পাঠ করবে আল্লাহ। তা'আলা তার ঘরের বাসিন্দাদেরকে এবং প্রতিবেশীদেরকে অভাবমুক্ত করে:দিবেন।” (হাফিয আবুল কাসিম তিবরানী (রঃ) এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসটি যঈফ বা দুর্রল) মুসনাদে আবী ইয়ালায় হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেনঃ “আমরা তাবুকের যুদ্ধ ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সাথে ছিলাম। সূর্য এমন স্বচ্ছ, উজ্জ্বল ও পরিষ্কারভাবে উদিত হলো যে, ইতিপূর্বে কখনো এমনভাবে সূর্য উদিত হতে দেখা যায়নি। রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর কাছে হযরত জিবরাঈল (আঃ) এলে তিনি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেনঃ “আজ এ রকম উজ্জ্বল দীপ্তির সাথে সূর্যোদয়ের কারণ কি?” হযরত জিবরাঈল (আঃ) উত্তরে বললেনঃ “আজ মদীনায় মুআবিয়া ইবনে মুআবিয়ার (রাঃ) ইন্তেকাল হয়েছে। তার জানাযার নামাযে অংশগ্রহণের জন্যে আল্লাহ রাব্বল আলামীন সত্তর হাজার ফেরেশতা আসমান থেকে পাঠিয়েছেন।” 

রাসূলুল্লাহ (সঃ) প্রশ্ন করলেনঃ “তার কোন্ আমলের কারণে এরূপ হয়েছে?” জবাবে হযরত জিবরাঈল (আঃ) বললেনঃ “তিনি দিন রাত সব সময় চলাফেরায় উঠা বসায় সূরা ইখলাস পাঠ করতেন। আপনি যদি তার জানাযার নামাযে হাজির হতে চান তবে চলুন, আমি জমীন সংকীর্ণ করে দিচ্ছি।” রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেনঃ “হ্যা, তাই ভাল।অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সঃ) ইবনে মুআবিয়া (রাঃ)-এর জানাযার নামায আদায় করলেন। (এ হাদীসটি হাফিয আবু বকর বায়হাকীও (রঃ) তার ‘দালাইলুন নবুওয়াত’ নামক গ্রন্থে ইয়াযীদ ইবনে হারুণের (রঃ) রিওয়াইয়াতে বর্ণনা করেছেন ইয়াযীদ (রঃ) আ’লা ইবনে মুহাম্মদ (রঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। এই আ’লা মাওযূ হাদীস বর্ণনা করে থাকেন বলে তার নামে অভিযোগ রয়েছে। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই ভাল জানেন) মুসনাদে আবী ইয়ালায় এ হাদীসের অন্য একটি সনদও রয়েছে। তাতে বর্ণনাকারী ভিন্ন ব্যক্তি।

 তাতে রয়েছে যে, হযরত জিবরাঈল (আঃ) রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট এসে বললেনঃ “মুআবিয়া ইবনে মুআবিয়া (রাঃ) ইন্তেকাল করেছেন। আপনি কি তার জানাযার নামায পড়তে চান?” রাসূলুল্লাহ (সঃ) উত্তরে বললেনঃ “হ্যা" হযরত জিবরাঈল (আঃ) তাঁর পালক দ্বারা জমীনে আঘাত করলেন। এর ফলে সমস্ত গাছ পালা, টিলা ইত্যাদি নিচু হয়ে গেল। রাসূলুল্লাহ (সঃ) মৃতের জানাযা দেখতে গেলেন। তিনি নামায শুরু করলেন। তাঁর পিছনে ফেরেশতাদের দুটি কাতার বা সারি ছিল। প্রত্যেক সারিতে সত্তর হাজার ফেরেশতা ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) হযরত জিবরাঈল (আঃ) কে জিজ্ঞেস করলেনঃ “মুআবিয়ার (রাঃ)-এরূপ মর্যাদার কারণ কি?" জবাবে হযরত জিবরাঈল (আঃ) বললেনঃ (আরবি) সূরাটির প্রতি তাঁর বিশেষ ভালবাসা এবং উঠতে বসতে, চলতে ফিরতে ও আসতে যেতে এ সূরাটি পাঠ করাই তার এ মর্যাদার কারণ।” (এ হাদীসটি ইমাম বায়হাকীও (রঃ) বর্ণনা করেছেন। তার এ হাদীসের সনদে মাহবুব ইবনে হিলাল রয়েছেন। আবু হাতিম রাযী (রঃ) বলেন যে, ইনি বর্ণনাকারী হিসেবে মাশহুর নন।

 মুসনাদে আবী ইয়ালায় বর্ণিত এ হাদীসের বর্ণনাকারী ইনি নন, সেখানে এর স্থলে আবু আবদিল্লাহ ইবনে মাসউদ রয়েছেন। কিন্তু মাহবুব ইবনে হিলালের বর্ণনাই যথার্থ বলে মনে হয়। কারণ আবু আবদিল্লাহ ইবনে মাহবুব রিওয়াইয়াতের আরো বহু সনদ রয়েছে এবং সব সনদই যঈফ বা দুর্বল) মুসনাদে আহমদে হযরত উকবা ইবনে আমির (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেনঃ “একদা রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সাথে আমার সাক্ষাৎ হলো। আমি সঙ্গে সঙ্গে তার সাথে মুসাফাহা (করমর্দন) করে বললামঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! মুমিনের মুক্তি কোন আমলে রয়েছে?” তিনি উত্তরে বললেনঃ “হে উকবা’ (রাঃ) জিহবা সংযত রেখো, নিজের ঘরেই বসে থাকো এবং নিজের পাপের কথা স্মরণ করে কান্নাকাটি করো।” পরে দ্বিতীয়বার রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সাথে আমার সাক্ষাৎ হলে তিনি নিজেই আমার সাথে করমর্দন করে বললেনঃ হে উকবা (রাঃ) আমি কি তোমাকে তাওরাত, ইঞ্জীল, যবূর এবং কুরআনে অবতীর্ণ সমস্ত সূরার মধ্যে উৎকৃষ্ট সূরার কথা বলবো?” আমি উত্তর দিলামঃ “হ্যা হে আল্লাহ রাসূল (সঃ)! অবশ্যই বলুন, আপনার প্রতি আল্লাহর আমাকে উৎসর্গিত করুন! তিনি তখন আমাকে সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, এবং সূরা নাস পাঠ করালেন, তারপর বললেনঃ “হে উকবা (রাঃ)“ এ সুরাগুলো ভুলো না। প্রতিদিন রাত্রে এগুলো পাঠ করো।

” হযরত উকবা (রাঃ) বলেনঃ এরপর থেকে আমি এ সূরাগুলোর কথা ভুলিনি এবং এগুলো পাঠ করা ছাড়া আমি কোন রাত্রি কাটাইনি। অতঃপর আমি রাসূলুল্লাহর (সঃ) সাথে সাক্ষাৎ করলাম এবং ত্বরিৎ তার হাত আমার হাতের মধ্যে নিয়ে আরয করলামঃ হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমাকে উত্তম আমলের কথা বলে দিন। তখন তিনি বললেনঃ “শোননা, যে তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে তুমি তার সাথে সম্পর্ক মিলিত রাখবে, যে তোমাকে বঞ্চিত করবে তুমি তাকে দান করবে। তোমার প্রতি যে যুলুম করবে তুমি তাকে ক্ষমা করবে।” (এ হাদীসের কিছু অংশ ইমাম তিরমিযী (রঃ) তাঁর জামে তিরমিযীতে যুহদ’ শীর্ষক অধ্যায়ে সংযোজন করেছেন এবং বলেছেন যে, এ হাদীসটি হাসান। মুসনাদে আহমদেও এ হাদীসের আরেকটি সনদ রয়েছে) সহীহ বুখারীতে হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) রাত্রিকালে যখন বিছানায় যেতেন তখন এ তিনটি সূরা পাঠ করে উভয় হাতের তালুতে ফুঁ দিয়ে সারা দেহের যত দূর পর্যন্ত হাত পৌঁছানো যায় ততদূর পর্যন্ত হাতের ছোঁয়া দিতেন। প্রথমে মাথায়, তারপর মুখে, এবং এরপর দেহের সামনের অংশে তিনবার এভাবে হাতের ছোঁয়া দিতেন। 

(এ হাদীসটি সুনানে আবী দাউদে বর্ণিত হয়েছে) ১-৪ নং আয়াতের তাফসীর এ সূরাটি অবতীর্ণ হওয়ার কারণ (শানে নুযূল) পূর্বেই বর্ণিত হয়েছে। হযরত ইকরামা (রঃ) বলেন যে, ইয়াহুদিরা বলতঃ আমরা আল্লাহর পুত্র (নাউযুবিল্লাহ) উযায়ের (আঃ)-এর উপাসনা করি।” আর খৃস্টানরা বলতোঃ “আমরা আল্লাহর পুত্র (নাউযুবিল্লাহ) ঈসার (আঃ) পূজা করি।” মাজুসীরা বলতোঃ “আমরা চন্দ্র সূর্যের উপাসনা করি।” আবার মুশরিকরা বলতোঃ আমরা মূর্তি পুজা করি।” আল্লাহ তা'আলা তখন এই সুরা অবতীর্ণ করেন। আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ হে নবী (সঃ)! তুমি বলোঃ আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্ এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর মত আর কেউই নেই। তার কোন উপদেষ্টা অথবা উযীর নেই। তিনি একমাত্র ইলাহ্ বা মাবুদ হওয়ার যোগ্য। নিজের গুণ বিশিষ্ট ও হিকমত সমৃদ্ধ কাজের মধ্যে তিনি একক ও বে-নযীর। তিনি সামাদ অর্থাৎ অমুখাপেক্ষী। সমস্ত মাখলুক, সমগ্র বিশ্বজাহান তার মুখাপেক্ষী। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, সামাদ তাকেই বলে যিনি নিজের নেতৃত্বে, নিজের মর্যাদায়, বৈশিষ্ট্যে, নিজের বুযর্গীতে, শ্রেষ্ঠত্বে জ্ঞান-বিজ্ঞানের, হিকমতে, বুদ্ধিমত্তায় সবারই চেয়ে অগ্রগণ্য। এই সব গুণ, শুধুমাত্র আল্লাহ জাল্লা শানুহুর মধ্যেই লক্ষ্য করা যায়। তাঁর সমতুল্য ও সমকক্ষ আর কেউ নেই। তিনি পূত পবিত্র মহান সত্তা। তিনি এক ও অদ্বিতীয়।

 তিনি সবারই উপর বিজয়ী, তিনি বেনিয়ায। সামাদ এর একটা অর্থ এও করা হয়েছে যে, ‘সামাদ’ হলেন তিনি যিনি সমস্ত মাখলুক ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পরও অবশিষ্ট থাকেন। যিনি চিরন্তন ও চিরবিদ্যমান। যার লয় ও ক্ষয় নেই এবং যিনি সব কিছু হিফাযতকারী। যার সত্তা অবিনশ্বর এবং অক্ষয়। হযরত ইকরামা (রঃ) বলেন যে, (আরবি) সেই সত্তা যিনি কোন কিছু আহারও করেন না। এবং যার মধ্য হতে কোন কিছু বেরও হয় না। আর যিনি কাউকেও বের করেন না। অর্থাৎ তিনি কাউকেও জন্ম দেন না। তাঁর কোন সন্তান সন্ততি নেই এবং তিনিও কারো সন্তান নন। তাঁর পিতা মাতা নেই। এ তাফসীর খুবই উত্তম ও উৎকৃষ্ট। ইমাম ইবনে জারীর (রঃ)-এর রিওয়াইয়াতে হযরত উবাই ইবনে কা'ব (রাঃ) থেকে উপরোক্ত বর্ণনা উল্লিখিত রয়েছে। বহু সংখ্যক সাহাবী ও তাবেয়ী' থেকে বর্ণিত আছে যে, সামাদ এমন জিনিষকে বলা হয় যা অন্তঃসার শূন্য নয়, যার পেট নেই। শাবী (রঃ) বলেন যে, সামাদ' এর অর্থ হলো যিনি পানাহার করেন না। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে বুরাইদাহ্ (রঃ) বলেন যে, “সামাদ’ এমন নুরকে বলা হয় যা উজ্জ্বল, রওশন ও দ্বীপ্তিময়। একটি মারফু হাদীসেও রয়েছে যে, সামাদ’ এমন এক সত্তা যার পেট নেই। অথাৎ যিনি আহারের প্রয়োজনীয়তা থেকে মুক্ত। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এ হাদীসটি মার’ নয়, বরং মাওকুফ। হাফিয আবুল কাসিম তিবরানী (রঃ) তাঁর আস সুন্নাহ গ্রন্থে সামাদ এর উপরোক্ত সব তাফসীর উল্লেখ করে লিখেছেন যে, আসলে এ সব কথাই সত্য ও সঠিক। 

উল্লিখিত সমস্ত গুণ এবং বৈশিষ্ট্য আমাদের মহান প্রতিপালকের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে। সবাই তার মুখাপেক্ষী, তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সবচেয়ে বড়। তাঁর আহারের প্রয়োজন নেই। সবই ধবংস হয়ে যাবে, কিন্তু তিনি চিরন্তন। তার লয় নেই, ক্ষয় নেই। তিনি অবিনশ্বর। এরপর ইরশাদ হচ্ছেঃ আল্লাহর সন্তান সন্ততি নেই, পিতা মাতা নেই, স্ত্রী নেই। যেমন কুরআন কারীমের অন্যত্র রয়েছেঃ (আরবি) অর্থাৎ “তিনি আসমান ও জমীনের সৃষ্টিকর্তা, কি করে তাঁর সন্তান হতে পারে? তার তো স্ত্রী নেই, সকল জিনিষ তো তিনিই সৃষ্টি করেছেন!” (৬:১০১) অর্থাৎ তিনি সব কিছুর স্রষ্টা ও মালিক, এমতাবস্থায় তাঁর সৃষ্টি ও মালিকানায় সমকক্ষতার দাবীদার কে হবে? অর্থাৎ তিনি উপরোক্ত সমস্ত আয়েব থেকে মুক্ত ও পবিত্র। যেমন কুরআনের অন্যত্র রয়েছেঃ (আরবি) অর্থাৎ “তারা বলেঃ দয়াময় সন্তান গ্রহণ করেছেন। তোমরা তো এক বীভৎস কথার অবতারণা করেছে; এতে যেন আকাশমণ্ডলী বিদীর্ণ হয়ে যাবে, পৃথিবী খণ্ড-বিখণ্ড হবে ও পর্বতমণ্ডলী চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে আপতিত হবে।

 যেহেতু তারা দয়াময়ের প্রতি সন্তান আরোপ করে। অথচ সন্তান গ্রহণ করা দয়াময়ের জন্যে শোভনীয় নয়। আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে এমন কেউ নেই, যে দয়াময়ের নিকট উপস্থিত হবে না বান্দারূপে। তিনি তাদেরকে পরিবেষ্টন করে রেখেছেন এবং তিনি তাদেরকে বিশেষভাবে গণনা করেছেন। আর কিয়ামতের দিন তাদের সকলেই তাঁর নিকট আসবে একাকী অবস্থায়।” (১৯:৮৮-৯৫) আল্লাহ তা'আলা আরো বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “তারা বলে যে, দয়াময়, সন্তান গ্রহণ করেছেন, অথচ আল্লাহ তা থেকে পবিত্র, বরং তারা তাঁর সম্মানিত বান্দী। কথার দিক থেকেও এই বান্দাসমূহ আল্লাহকে অতিক্রম করে না, বরং তারা আল্লাহর ফরমান যথারীতি পালন করে।" (২১:২৬-২৭) আল্লাহ পাক আর এক জায়গায় বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “তারা আল্লাহ ও জ্বিনদের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করে রেখেছে। অথচ জ্বিনেরা জানে তাদেরকে ও শাস্তির জন্যে উপস্থিত করা হবে।

 আল্লাহ তা'আলা তাদের বর্ণিত দোষ-ত্রুটি থেকে মুক্ত ও পবিত্র।” (৩৭:১৫৮-১৫৯) সহীহ বুখারীতে রয়েছে যে, কষ্টদায়ক কথা শুনে এতো বেশী ধৈর্য ধারণকারী আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নেই। মানুষ বলে যে, আল্লাহর সন্তান রয়েছে, তবুও তিনি তাকে অন্ন দান করছেন, স্বাস্থ্য ও সুস্থতা দান করছেন। সহীহ বুখারীতে হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “আদম সন্তান আমাকে অবিশ্বাস করে, অথচ এটা তার জন্যে সমীচীন নয়। সে আমাকে গালি দেয়, অথচ এটাও তার জন্যে সমীচীন ও সঙ্গত নয়। তারা আমাকে অবিশ্বাস করে বলে যে, আমি নাকি প্রথমে তাকে যেভাবে সৃষ্টি করেছি পরে আবার সেভাবে পুনরুজ্জীবিত করতে পারবো না। অথচ দ্বিতীয়বারের সৃষ্টির চেয়ে প্রথমবারের সৃষ্টি তো সহজ ছিল না। যদি আমি প্রথমবারের সৃষ্টিতে সক্ষম হয়ে থাকি তবে দ্বিতীয়বারের সৃষ্টিতে সক্ষম হবো না কেন?” আর সে আমাকে গালি দিয়ে বলে যে, আমার নাকি সন্তান রয়েছে, অথচ আমি একাকী, আমি অদ্বিতীয়, আমি অভাবমুক্ত ও অমুখাপেক্ষী। আমার কোন সন্তান সন্ততি নেই। আমার পিতা মাতা নেই, এবং আমার সমতুল্য কেউ নেই।”

সুরা ফালাখ এর তাৎপর্য ও গুরত্ত ।

সুরা ফালাখ এর তাৎপর্য ও গুরত্ত ।

 সুরা ফালাখ এর তাৎপর্য ও গুরত্ত ।

 قُلۡ اَعُوۡذُ  بِرَبِّ الۡفَلَقِ ۙ﴿۱﴾

বল, ‘আমি আশ্রয় চাচ্ছি সকাল বেলার রব-এর, ১-৫ নং আয়াতের তাফসীর মুসনাদে ইবনে আবী হাতিমে হযরত জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, (আরবি) সকাল বেলাকে বলা হয়। আওফী (রঃ) হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতেও এটাই বর্ণনা করেছেন। কুরআন কারীমেরই অন্য জায়গায় (আরবি) রয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে এটাও বর্ণিত আছে যে, (আরবি) এর অর্থ হলো মাখলুক। হযরত কা'ব আহবার (রাঃ) বলেন যে, (আরবি) হলো জাহান্নামের একটি জায়গা।

 ঐ জায়গার দরজা খোলা হলে তথাকার আগুনের উত্তাপ এবং ভয়াবহতায় জাহান্নামের সমস্ত অধিবাসী চীৎকার করতে শুরু করে। একটি মারফু হাদীসেও উপরোক্ত হাদীসেরই প্রায় অনুরূপ উক্তি রয়েছে। কিন্তু ওটাকে মুনকার হাদীস বলা হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন যে, (আরবি) জাহান্নামের নাম। ইমাম ইবনে জারীর (রঃ) বলেন যে, প্রথমটিই সবচেয়ে বেশী নির্ভরযোগ্য উক্তি। অর্থাৎ (আরবি) এর অর্থ হলো সকাল বেলা। ইমাম বুখারীও (রঃ) একথাই বলেছেন এবং এটাই নির্ভুল। 

সমস্ত সৃষ্ট বস্তুর অপকারিতার মধ্যে জাহান্নাম, ইবলীস ও ইবলীসের সন্তান সন্ততিও রয়েছে। (আরবি) এর অর্থ হলো রাত। (আরবি) এর অর্থ হলো সূর্যাস্ত। অর্থাৎ যখন অন্ধকার রাত উপস্থিত হয়। ইবনে যায়েদ (রঃ) বলেন যে, আরবের লোকেরা সুরাইয়া নক্ষত্রের অস্তমিত হওয়াকে বলে। অসুখ এবং বিপদ আপদ সুরাইয়া নক্ষত্র উদিত হওয়ার পর বৃদ্ধি পায় এবং ঐ নক্ষত্র অস্তমিত হওয়ার পর অসুখ বিপদ আপদ কেটে যায়। একটি মারফু হাদীসে রয়েছে যে, (আরবি) হলো নক্ষত্রের নাম। কিন্তু এ হাদীসের মারফু হওয়ার কথা সত্য নয়। 

কোন কোন তাফসীরকার বলেন যে, (আরবি) এর অর্থ হলো চাঁদ। তাফসীরকারদের দলীল হলো মুসনাদে আহমদে বর্ণিত একটি হাদীস, যাতে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর হাত ধরে চাঁদের প্রতি ইশারা করে বললেনঃ “আল্লাহর কাছে ঐ (আরবি) এর অপকারিতা হতে আশ্রয় প্রার্থনা কর।" অন্য রিওয়াইয়াতে আছে যে, (আরবি) দ্বারা এটাই বুঝানো হয়েছে। উভয় উক্তির মধ্যে সহজেই সামঞ্জস্য বিধানের জন্যে বলা যেতে পারে যে, এটা হলো চাদের ক্রমবৃদ্ধি এবং নক্ষত্ররাজির আত্মপ্রকাশ ইত্যাদি।

 এসব কিছু রাত্রিকালেই হয়ে থাকে এবং যখন রাত্রির আগমন ঘটে। এ সব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই সঠিক জ্ঞানের অধিকারী। গ্রন্থিসমূহের উপর পড়ে পড়ে ফুৎকারকারিণীরা অর্থাৎ যাদুকর নারীগণ। হযরত মুজাহিদ (রঃ) বলেন যে, যেই মন্ত্র পাঠ করে সাপে কাটা রোগীর উপর ফু দেয়া হয় এবং ভূত প্রেত তাড়ানোর জন্যে ফু দেয়া হয় এগুলো শিরকের খুবই কাছাকাছি। অন্য হাদীসে রয়েছে যে, হযরত জিবরাঈল (আঃ) রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর কাছে এসে বললেনঃ “হে মুহাম্মদ (সঃ) আপনি কি রোগাক্রান্ত?” রাসূলুল্লাহ (সঃ) উত্তরে বললেন “হ্যা” হযরত জিবরাঈল (আঃ) তখন নিম্নের দু'আ দু'টি পাঠ করেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ফু দিচ্ছি সেই সব রোগের জন্যে যা আপনাকে কষ্ট দেয়, প্রত্যেক হিংসুকের অনিষ্ট ও কুদৃষ্টি হতে আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য দান করুন। এই রোগ দ্বারা সম্ভবতঃ ঐ রোগকেই বুঝানো হয়েছে যে রোগে তিনি যাদুকৃত হওয়ার পর আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন। অতঃপর আল্লাহ তা'আলা স্বীয় রাসূল (সঃ) কে সুস্থতা ও আরোগ্য দান করেন। এতে হিংসুটে ইয়াহুদীদের যাদুর প্রভাব নস্যাৎ হয়ে যায়। 

If you want to read the Latest English News, click here:


তাদের সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত ব্যর্থ করে দেয়া হয়। তারা চরমভাবে লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়। রাসূলুল্লাহ (সঃ) কে যাদু করা সত্ত্বেও তিনি যাদুকারীদেরকে কোন কটু কথা বলেননি এবং ধমকও। দেননি। আল্লাহ তা'আলা স্বীয় নবী (সঃ) কে সুস্থতা ও আরোগ্য দান করেন। মুসনাদে আহমদে হযরত যায়েদ ইবনে আরকাম (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী (সঃ) এর উপর একজন ইয়াহূদী যাদু করেছিল। এই কারণে নবী (সঃ) কয়েকদিন পর্যন্ত অসুস্থ ছিলেন। তারপর হযরত জিবরাঈল (আঃ) এসে তাঁকে জানান যে, অমুক ইয়াহূদী তার উপর যাদু করেছে এবং অমুক অমুক কুঁয়ায় গ্রন্থি বেঁধে রেখেছে। সুতরাং তিনি যেন কাউকে পাঠিয়ে ঐ গ্রন্থি খুলিয়ে আনেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) লোক পাঠিয়ে তখন কুঁয়া থেকে ঐ যাদু বের করিয়ে আনান এবং গ্রন্থিখুলে ফেলেন। ফলে যাদুর প্রভাব কেটে যেতে শুরু করে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ। (সঃ) ঐ ইয়াহুদীকে এ সম্পর্কে একটি কথাও বলেননি। এবং তাকে দেখে। কখনো মুখও মলিন করেননি।

 সহীহ বুখারীতে কিতাবুত তিব্বে হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর উপর যাদু করা হয়েছিল। রাসূলুল্লাহ ভেবেছিলেন যে, তিনি তাঁর স্ত্রীদের কাছে গিয়েছেন, অথচ তিনি তাদের কাছে যাননি। হযরত সুফইয়ান (রঃ) বলেন যে, এটাই যাদুর সবচেয়ে বড় প্রভাব। এ অবস্থা হওয়ার পর একদিন রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেনঃ “হে আয়েশা (রাঃ)! আমি আমার প্রতিপালককে জিজ্ঞেস করেছি এবং তিনি আমাকে জানিয়েছেন। দু’জন লোকে আমার কাছে আসেন।

 একজন আমার মাথার কাছে এবং অন্যজন আমার পায়ের কাছে বসেন 'আমার কাছে অর্থাৎ শিয়রে যিনি বসেছিলেন, তিনি দ্বিতীয়জনকে জিজ্ঞেস করলেনঃ “এর অবস্থা কি?” দ্বিতীয়জন উত্তরে বললেনঃ “এঁর উপর যাদু করা হয়েছে। প্রথম জন প্রশ্ন করলেনঃ “কে যাদু করেছে?" দ্বিতীয়জন জবাব দিলেনঃ “লুবাইদ ইবনে আসাম। সে বান্ যুরাইক গোত্রের লোক। সে ইয়াহূদীদের মিত্র এবং মুনাফিক।" প্রথম জন জিজ্ঞেস করলেনঃ “কিসের মধ্যে যাদু করেছে?" দ্বিতীয়জন উত্তর দিলেনঃ “মাথার চুলে ও চিরুণীতে। প্রথমজন প্রশ্ন করলেনঃ “কোথায়, তা দেখাও।” দ্বিতীয়জন উত্তর দিলেনঃ “খেজুর গাছের বাকলে, পাথরের নিচে এবং যারওয়ান কূপে।” অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সঃ) ঐ কূপের কাছে গমন করলেন এবং তা থেকে ওসব বের করলেন। ঐ কূপের পানি ছিল যেন মেহদীর রঙ। ওর পাশের খেজুর গাছগুলোকে ঠিক শয়তানের মাথার মত মনে হচ্ছিল।

If you want to read the Islamic related news, click here:


 হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেনঃ আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল (সঃ): এ কাজের জন্যে তার উপর প্রতিশোধ গ্রহণ করা উচিত। রাসূলুল্লাহ (সঃ) একথা শুনে বললেনঃ “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। তিনি আমাকে নিরাময় করেছেন ও সুস্থতা দিয়েছেন। আমি মানুষের মধ্যে মন্দ ছড়ানো পছন্দ করি না।” অন্য একটি বর্ণনায় আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) কোন একটা কাজ করেননি। অথচ তাঁর মনে হতো যে, তিনি ওটা করেছেন। এটাও বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহর (সঃ) নির্দেশক্রমে ঐ কূপে মাটি ভর্তি করে দেয়া হয়। এও বর্ণনা করা হয়েছে যে, ছয় মাস পর্যন্ত রাসূলুল্লাহর (সঃ) এরূপ অবস্থা ছিল। তাফসীরে সালাবীতে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) ও হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, ইয়াহূদীদের একটা ছেলে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর খিদমত করতো। 

ঐ ছেলেটিকে ফুসলিয়ে ইয়াহুদীরা রাসূলুল্লাহর (সঃ) কয়েকটি চুল এবং তাঁর চুল আঁচড়াবার চিরুনীর কয়েকটি দাঁত হস্তগত করে। তারপর তারা ওগুলোতে যাদু করে। এ কাজে সবচেয়ে বেশী সচেষ্ট ছিল লুবাইদ ইবনে আসাম। এরপর যাদুর গ্রন্থি বা সুরাইক যারওয়ান নামক কূপে স্থাপন করে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সঃ) অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তার স্ত্রীদের কাছে গমন না করেও তাঁর মনে হতো যে তিনি তাদের কাছে গমন করেছেন। এইমন ভুলো অবস্থা দূরীকরণের জন্যে রাসূলুল্লাহ (সঃ) সচেষ্ট ছিলেন, কিন্তু এরকম অবস্থা হওয়ার কারণ তাঁর জানা ছিল না। ছয় মাস পর্যন্ত ঐ একই অবস্থা চলতে থাকে। তারপর উপরোল্লিখিত ঘটনা ঘটে। দুজন ফেরেশতা এসে কথােপকথনের মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ (সঃ) 

If you want to read the Home Based Business News, clickhere:


কে প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে সচেতন করেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তখন হযরত আলী (রাঃ), হযরত যুবায়ের (রাঃ) এবং হযরত আম্মার (রাঃ) কে পাঠিয়ে কূপ থেকে যাদুর গ্রন্থিগুলো বের করিয়ে আনেন। ঐ যাদুকৃত জিনিষগুলোর মধ্যে একটি ধনুকের রঞ্জু ছিল, তাতে ছিল বারোটি গ্রন্থি বা গেরো। প্রত্যেক গেরোতে একটি করে সূচ বিদ্ধ করে দেয়া হয়েছিল। তারপর আল্লাহ তা'আলা এ সূরা দু’টি অবতীর্ণ করেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) এ সূরা দু’টির এক একটি আয়াত পাঠ করছিলেন আর ঐ গ্রন্থিসমূহ একটি একটি করে আপনা আপনি খুলে যাচ্ছিল। সূরা দু'টি পূর্ণ হওয়ার সাথে সাথে সমস্ত গেরোই খুলে যায় এবং রাসূলুল্লাহ (সঃ) সম্পূর্ণরূপে সুস্থ হয়ে ওঠেন। এদিকে হযরত জিবরাঈল (আঃ) উপরোল্লিখিত দু'আ পাঠ করেন। সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ (সঃ) কে বলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমরা কি ঐ নরাধমকে ধরে হত্যা করে ফেলবো রাসূলুল্লাহ (সঃ) উত্তরে বললেনঃ “না, আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা আমাকে আরোগ্য দান করেছেন। আমি মানুষের মধ্যে অনিষ্ট ও বিবাদ ফাসাদ সৃষ্টি করতে চাই না।”এ বর্ণনায় গারাবাত ও নাকারাত রয়েছে। এ সব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন।

সুরা নাছ এর আমল ও ফযিলত । (যে সুরা মানুষ কে সকল প্রকার খতি ও বদ নসিব থেকে হেফাজত করে।)

 
যে সুরা মানুষ কে সকল প্রকার খতি ও বদ নসিব থেকে হেফাজত করে।

সুরা নাছ এর  আমল ও ফযিলত । (যে সুরা মানুষ কে সকল প্রকার খতি ও বদ নসিব থেকে হেফাজত করে।)

قُلۡ  اَعُوۡذُ  بِرَبِّ النَّاسِ ۙ﴿۱﴾
বল, ‘আমি আশ্রয় চাচ্ছি মানুষের প্রতিপালকের, ১-৬ নং আয়াতের তাফসীর এ সূরায় মহা মহিমান্বিত আল্লাহর তিনটি গুণ বিবৃত হয়েছে। অর্থাৎ তিনি হলেন পালনকর্তা, শাহানশাহ এবং মা'বুদ বা পূজনীয়। সব কিছু তিনিই সৃষ্টি করেছেন, সবই তার মালিকানাধীন এবং সবাই তার আনুগত্য করছে। 

তিনি তার প্রিয় নবী (সঃ)-কে নির্দেশ দিচ্ছেনঃ হে নবী (সঃ)! তুমি বলে দাও, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি মানুষের প্রতিপালকের, মানুষের অধিপতির এবং মানুষের মা'বুদের, পশ্চাদপসরণকারীর অনিষ্ট হতে যে মানুষের অন্তরসমূহে কুমন্ত্রণা ও প্ররোচনা দিয়ে থাকে। চাই সে জ্বিন হোক অথবা মানুষ হোক। অর্থাৎ যারা অন্যায় ও খারাপ কাজকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে চোখের সামনে হাজির করে পথভ্রষ্ট এবং বিভ্রান্ত করার কাজে যারা অতুলনীয়। আল্লাহর অনুগ্রহপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাই শুধু তাদের অনিষ্ট হতে রক্ষা পেতে পারে।

 সহীহ হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) বলেছেনঃ “তোমাদের প্রত্যেকের সাথে একজন করে শয়তান রয়েছে।” সাহাবিগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আপনার সাথেও কি শয়তান রয়েছে?” উত্তরে তিনি বললেনঃ “হ্যা আমার সঙ্গেও শয়তান রয়েছে? কিন্তু আল্লাহ তাআলা ঐ শয়তানের মুকাবিলায় আমাকে সাহায্য করেছেন, কাজেই আমি নিরাপদ থাকি। সে আমাকে পুণ্য ও কল্যাণের শিক্ষা দেয়।” 

সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর ই'তেকাফে থাকা অবস্থায় উম্মুল মু'মিনীন হযরত সফিয়া (রাঃ) তাঁর সাথে রাতের বেলায় দেখা করতে গিয়েছিলেন। তিনি ফিরে যাবার সময় রাসূলুল্লাহ্ (সঃ)ও তাঁকে এগিয়ে দেয়ার জন্যে তাঁর সঙ্গে সঙ্গে চলতে থাকেন। পথে দু’জন আনসারীর সাথে দেখা হলো। তারা রাসূলুল্লাহ্ (সঃ)-এর সাথে তাঁর স্ত্রীকে দেখে দ্রুতগতিতে হেঁটে যাচ্ছিলেন। রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) তাঁদেরকে থামালেন এবং বললেনঃ “জেনে রেখো যে, আমার সাথে যে মহিলাটি রয়েছে এটা আমার স্ত্রী সফিয়া বিনতে হুইয়াই (রাঃ)।” তখন আনসারী দু’জন বললেনঃ “আল্লাহ্ পবিত্র। হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)। এ কথা আমাদেরকে বলার প্রয়োজনই বা কি ছিল?” রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) উত্তরে বললেনঃ “মানুষের রক্ত।

If you want to read the Bangla latest  News, click here:


 প্রবাহের স্থানে শয়তান ঘোরাফেরা করে থাকে। সুতরাং আমি আশংকা করছিলাম যে, শয়তান তোমাদের মনে সন্দেহ সৃষ্টি করে দেয় না কি।” হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) বলেছেন “শয়তান তার হাত মানুষের অন্তকরণের উপর স্থাপন করে রেখেছে। মানুষ যখন আল্লাহর ইবাদত করে তখন সে নিজের হাত মানুষের অন্তকরণ থেকে সরিয়ে নেয়। আর যখন মানুষ আল্লাহকে ভুলে যায় তখন শয়তান মানুষের অন্তকরণের উপর পূর্ণ প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

 এটাই শয়তানের কুমন্ত্রণা ও প্ররোচনা এবং এটাই ওয়াসওয়াসাতুল খান্নাস।” (এ হাদীসটি হাফিয আবূইয়ালা মুসিলী (রঃ) বর্ণনা করেছেন। কিন্তু হাদীসটি গারীব বা দুর্বল) মুসনাদে আহমাদে এমন একজন সাহাবী হতে বর্ণিত আছে যিনি গাধার পিঠে রাসূলুল্লাহ্ (সঃ)-এর পিছনে উপবিষ্ট ছিলেন। গাধা একটু হোঁচট খেলে ঐ সাহাবী বলে ওঠেনঃ “শয়তান ধ্বংস হোক।” তাঁর এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) বলেনঃ “এভাবে বলো না, এতে শয়তান আরো বড় হয়ে যায়, আরো এগিয়ে আসে এবং বলেঃ আমি নিজের শক্তি দ্বারা তাকে কাবু করেছি।

 আর যদি বিসমিল্লাহ বলো তবে সে ছোট হতে হতে মাছির মতে হয়ে যায়। এতে প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহর স্মরণে শয়তান পরাজিত ও নিস্তেজ হয়ে যায়। আর আল্লাহকে বিস্মরণ হলে সে বড় হয়ে যায় ও জয়যুক্ত হয়। হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “তোমাদের মধ্যে কেউ মসজিদে প্রবেশ করলে শয়তান তার কাছে যায় এবং আদর করে তার গায়ে হাত বুলাতে থাকে, যেমন মানুষ গৃহপালিত পশুকে আদর করে। ঐ আদরে লোকটি চুপ করে থাকলে শয়তান তার নাকে দড়ি বা মুখে লাগাম পরিয়ে দেয়।

” হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) এ হাদীসটি বর্ণনা করে বলেনঃ “তোমরা স্বয়ং নাকে দড়ি লাগানো এবং মুখে লাগাম পরিহিত লোককে দেখতে পাও। নাকে দড়ি লাগানো হলো ঐ ব্যক্তি যে এক দিকে ঝুঁকে দাঁড়িয়ে থাকে এবং আল্লাহকে স্মরণ করে না। আর মুখে লাগাম পরিহিত হলো ঐ ব্যক্তি যে মুখ খুলে রাখে এবং আল্লাহর যিক্র করে না।” হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) এ আয়াতের তাফসীরে বলেন যে, শয়তান আদম সন্তানের মনে তার থাবা বসিয়ে রাখে। মানুষ যেখানেই ভুল করে এবং উদাসীনতার পরিচয় দেয় সেখানেই সে কুমন্ত্রণা দিতে শুরু করে।

 আর যেখানে মানুষ আল্লাহকে স্মরণ করে সেখানে সে পশ্চাদপসরণ করে। অন্য বর্ণনায় আছে যে, সুখ-শান্তি এবং দুঃখ কষ্টের সময় শয়তান মানুষের মনে ছিদ্র করতে চায়। অর্থাৎ তাকে পথভ্রষ্ট ও বিভ্রান্ত করতে চেষ্টা করে। এ সময়ে যদি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আল্লাহকে স্মরণ করে তবে শয়তান পালিয়ে যায়। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, শয়তানকে মানুষ যেখানে প্রশ্রয় দেয় সেখানে সে মানুষকে অন্যায় অপকর্ম শিক্ষা দেয়, তারপর কেটে পড়ে। এরপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ মানব মণ্ডলীর অন্তর সমূহে কুমন্ত্রণা দেয়। (আরবি) শব্দের অর্থ মানুষ। তবে এর অর্থ জ্বিনও হতে পারে। কুরআন কারীমের অন্যত্র রয়েছেঃ (আরবি) অর্থাৎ জ্বিনের মধ্য হতে কতকগুলো তোক। কাজেই জ্বিনসমূহকে শব্দের অন্তর্ভুক্ত করা অসঙ্গত নয়। 

মোটকথা, শয়তান। জ্বিন এবং মানুষের মনে কুমন্ত্রণা দিয়ে থাকে। (আরবি) (জ্বিনের মধ্য হতে অথবা মানুষের মধ্য হতে)। অর্থাৎ এরা কুমন্ত্রণা দিয়ে থাকে, চাই সে জ্বিন হোক অথবা মানুষ হোক। এর তাফসীর এরূপও করা হয়েছে। মানব ও দানব শয়তানরা মানুষের অন্তরে কুমন্ত্রণা দেয়। যেমন আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা অন্য এক জায়গায় বলেনঃ (আরবি) অর্থাৎ “এভাবেই আমি মানবরূপী অথবা দানবরূপী শয়তানকে প্রত্যেক নবীর শত্রু বানিয়েছি। একজন অন্যজনের কানে ধোকা-প্রতারণামূলক কথা সাজিয়ে গুছিয়ে ব্যক্ত করে।” (৬:১১২)। মুসনাদে আহমদে হযরত আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি একদা রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর নিকট হাজির হন। ঐ সময় রাসূলুল্লাহ (সঃ) মসজিদে অবস্থান করছিলেন।

If you want to read the updated English News, click here:


হযরত আবু যার (রাঃ) তার পাশে বসে পড়লেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ “হে আবু যার (রাঃ)! তুমি নামায পড়েছো কি?” তিনি উত্তরে বললেনঃ “জ্বী, না।” তখন তিনি বললেনঃ “তা হলে উঠে নামায পড়ে নাও।” হযরত আবু যার (রাঃ) উঠে নামায পড়লেন। তারপর বসে পড়লেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে বললেনঃ “হে আবু যার (রাঃ) মানবরূপী শয়তান হতে এবং দানবরূপী শয়তান হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা কর।” হযরত আবু যার (রাঃ) বললেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! মানুষের মধ্যেও কি শয়তান আছে? উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেনঃ “হ্যা”, হযরত আবু যার (রাঃ) জিজ্ঞেস। করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ) নামায কি?" তিনি জবাবে বললেনঃ “নামায খুব ভাল কাজ। যার ইচ্ছা কম পড়তে পারে এবং যার ইচ্ছা বেশী পড়তে পারে।

” হযরত আবু যার (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)। রোযা কি?” তিনি জবাব দিলেনঃ “যথেষ্ট হওয়ার মত একটি ফরজ কাজ। আল্লাহর কাছে এর জন্যে বহু পুরস্কার রয়েছে। হযরত আবু যার (রাঃ) প্রশ্ন করলেনঃ “সাদকা কি?" তিনি উত্তরে বললেনঃ “সাদকা এমনই জিনিষ যার বিনিময় বহুগুণ বৃদ্ধি করে প্রদান করা হবে।” হযরত আবু যার (রাঃ) আর করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)। কোন সাদকা সবচেয়ে উত্তম?” রাসূলুল্লাহ। (সঃ) উত্তর দিলেনঃ “সম্পদ কম থাকা সত্ত্বেও সাদকা করা, অথবা চুপে চুপে কোন ফকীর মিসকীন ও দুঃখী জনের সাথে উত্তম ব্যবহার করা।” হযরত আবু যার (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! সর্বপ্রথম নবী কে ছিলেন?”

তিনি জবাবে বললেনঃ “হযরত আদম (আঃ) ছিলেন প্রথম নবী।” হযরত আবু যার (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ “হযরত আদম (আঃ) কি নবী ছিলেন?” রাসূলুল্লাহ (সঃ) জবাব দিলেনঃ “হ্যা, তিনি নবী ছিলেন, এবং এমন ব্যক্তি ছিলেন যার সঙ্গে আল্লাহ তা'আলা কথাবার্তা বলেছেন।” হযরত আবু যার (রাঃ) প্রশ্ন করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)। রাসূল কত জন ছিলেন?” তিনি উত্তরে বললেনঃ “তিনশত দশের কিছু বেশী, বলা যায় একটি বড় জামাআত।” আবার এও বললেনঃ “তিনশত পনেরো।” হযরত আবু যার (রাঃ) বললেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)!

আপনার প্রতি নাযিলকৃত আয়াতসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বেশী বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আয়াত কোনটি?” রাসূলুল্লাহ (সঃ) জবাব দিলেনঃ “আয়াতুল কুরসী অর্থাৎ,(আরবি) এই আয়াতটি।” (এ হাদীসটি ইমাম নাসায়ীও (রঃ) বর্ণনা করেছেন। তাছাড়া ইমাম আবু হাতিম ইবনে হিব্বানও (রঃ) অন্য সনদে এ হাদীসটি দীর্ঘভাবে বর্ণনা করেছেন। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন) মুসনাদে আহমদে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, একটি লোক নবী (সঃ)-এর নিকট এসে বললোঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমার মনে এমন সব চিন্তা আসে যেগুলো প্রকাশ করার চেয়ে আকাশ থেকে পড়ে যাওয়াই আমার নিকট বেশী পছন্দনীয় (সুতরাং এ অবস্থায় আমি কি করবো?)। নবী (সঃ) উত্তরে বললেনঃ “(তুমি বলবে): (আরবি) অর্থাৎ “আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান আল্লাহ তা'আলার জন্যেই সমস্ত প্রশংসা যিনি শয়তানের প্রতারণাকে ওয়াসওয়াসা অর্থাৎ শুধু কুমন্ত্রণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছেন, বাস্তবে কার্যে পরিণত করেননি।”

কুরআনের প্রতি মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য।

 

কুরআনের প্রতি মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য।

কুরআনের প্রতি মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য। 

কুরআনের প্রতি মানুষের দায়িত্ব। কুরআন হ'ল মানব মুক্তির পথ। আলোর দিক। সাফল্যের মাধ্যম। এজন্য মুসলমানদের উচিত সঠিকভাবে কুরআন তেলাওয়াত করা। তাঁর দেখানো পথে তাদের জীবনযাপন করা। কুরআনে বিশ্বাসী। আরও বেশি করে কুরআন তেলাওয়াত করা। অর্থটি জানার এবং বোঝার চেষ্টা করছি।

বিশেষত দৈনন্দিন জীবনের করণীয় এবং করণীয় সম্পর্কে কুরআনের নির্দেশাবলী জানতে সেই অনুযায়ী কাজ করা। তাত্ক্ষণিকভাবে কুরআনের সত্য ও সৌন্দর্যের বাণী মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। এটি কুরআনের প্রতি মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য। যারা কুরআনের এই বিষয়গুলিকে সমস্ত মন এবং প্রাণ দিয়ে মেনে চলবে তারা মূলত কুরআনে বিশ্বাসী। কুরআনের সত্য অনুসারী।

আর যারা মুসলমান হওয়ার পরেও এইভাবে কুরআনে বিশ্বাস করে না, সমস্ত আমল অনুসরণ করে না, তারা পার্থিব জীবনের রীতিনীতি ও পরিচিতি অনুসারে মুসলমান, তবে তারা আল্লাহর সাথে মুসলমান নয়। আসলেই ইসলামের অনুসারী নয়। কেবল মৌখিক মুসলমান। আবার সমাজে কিছু মুসলমান আছেন যারা কুরআনকে শ্রদ্ধার সাথে দেখেন। পবিত্র বইয়ের কথা ভাবুন। তবে তারও সন্দেহ রয়েছে। আমি অবাক হই যে আমরা যদি কুরআনের এতগুলি বিধিনিষেধ মেনে চলি তবে এই পৃথিবীতে সুখ ও শান্তি অর্জিত হবে কি না। আনন্দ করতে হবে কিনা।

তাদের কুরআনে বিশ্বাসী বলা যায় না কারণ তারা কুরআনের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেও কুরআনে যথাযথ বিশ্বাস রাখে না। কারণ কুরআনের প্রতি যদি আমাদের পূর্ণ বিশ্বাস থাকে তবে তা আমাদের মঙ্গল বয়ে আনবে। সুতরাং কুরআনের প্রতি মানের অধিকার অনুধাবনের পাশাপাশি এর তিলাওয়াত, বোঝার, অনুসরণ ও প্রচারের অধিকারগুলিতে আমাদের গভীর মনোযোগ দিতে হবে।

If you want to read the Business related news, click here:

 মনযোগী হও. কারণ এই দুনিয়া ও আখেরাতের সাফল্য ও মুক্তি কেবল কুরআনের অধিকার আদায়ের মাধ্যমেই সম্ভব। সুতরাং কুরআনের অধিকার আদায়ের জন্য আমাদের কিছু করা দরকার। কাজগুলি মনোযোগ সহকারে কুরআন শোনানো। কেউ কুরআন তিলাওয়াত করার সময় অযত্ন থাকবেন না। নিঃশব্দে শুনতে।

এ সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছে, "এবং যখন কুরআন তেলাওয়াত করা হয় তখন তা শোন এবং নীরব থাক, যাতে তোমার প্রতি দয়া দেখাতে পারে।" সূরা আল-আরাফ, আয়াত ২০৪। সঠিকভাবে কুরআন তেলাওয়াত করা। সঠিক নিয়ম পড়ুন। অপরিষ্কার এড়ানো। এ প্রসঙ্গে কুরআন বলে, "যাদের কাছে আমি কিতাব দিয়েছি তারা এটিকে সঠিকভাবে পড়ে।" তারা তাঁকে বিশ্বাস করে।

If you want to read the English Updated news, click here: 

আর যারা কাফের, তারাই ক্ষতিগ্রস্থ হবে। 'সূরা বাকারা, আয়াত ১২১. কুরআন মুখস্থ করুন। এমনকি আপনি সবকিছু করতে না পারলে স্থান নির্দিষ্ট করে মুখস্থ করুন। কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, "বরং তাদের জ্ঞান দেওয়া হয়েছে তাদের অন্তরে এটি একটি সুস্পষ্ট আয়াত। কেবলমাত্র কাফেররা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে।" সূরা আনকাবুত, আয়াত ৪৯।

কুরআনের আয়াত নিয়ে চিন্তা করা। গবেষণা করুন এর গভীরতা উপলব্ধি করার চেষ্টা করছেন। এ সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছে, "এটি একটি বরকতময় কিতাব যা আমরা আপনার প্রতি অবতারণ হিসাবে অবতীর্ণ করেছি, যাতে লোকেরা এর আয়াতগুলিতে মনোযোগ নিতে পারে এবং যাতে বোধগম্যরা তা বুঝতে পারে। "

 আরও পড়তে এখানে ক্লিক করুনঃ  ইসলাম অনুসারে ছাত্রকে পড়ানোর উপায়।

লেখক: ইসলাম সম্পর্কিত গবেষক।

একটি মিথ্যা প্রচারের সংশোধনঃ মৌলভী মোহাম্মদ নাইমুদ্দিন কুরআনের প্রথম বাংলা অনুবাদক।

একটি মিথ্যা প্রচারের সংশোধনঃ মৌলভী মোহাম্মদ নাইমুদ্দিন কুরআনের প্রথম বাংলা অনুবাদক।

 একটি মিথ্যা প্রচারের সংশোধনঃ মৌলভী মোহাম্মদ নাইমুদ্দিন কুরআনের প্রথম বাংলা অনুবাদক।

গিরিশচন্দ্র সেন বাংলা ভাষায় কুরআনের অনুবাদক ছিলেন না তবে মুদ্রণযন্ত্রের মালিক হিসাবে তিনি বইটি টাকার বিনিময়ে মুদ্রিত দিয়েছিলেন যাকে বলে প্রকাশক।

১৮০৮ সালে মাওলানা আমিরউদ্দীন বসুনিয়া সর্বপ্রথম বাংলা ভাষায় কোরআনের আংশিক অনুবাদ করেছিলেন।তারপরে নাঈমুদ্দীন ১৮৩৬ সালে সম্পূর্ণ কোরআনের বাংলা অনুবাদ করেছিলেন।

গিরিশচন্দ্র সেন সবেমাত্র বই আকারে অনুবাদ সন্নিবেশ করেছেন, গিরিশচন্দ্র প্রকাশক। এমনকি পরে, ১৮৮৬ সালে।সুতরাং এটি গিরিশচন্দ্র নয় যিনি কুরআনের প্রথম বাংলা অনুবাদক, বরং মৌলভী নাঈমুদ্দীন সম্পূর্ণ কোরআনের প্রথম বাংলা অনুবাদক।এবং মাওলানা আমিরউদ্দীন বসুনিয়া ছিলেন বাংলা ভাষায় কুরআন মজিদের প্রথম আংশিক অনুবাদক।

গিরিশচন্দ্র সেন ১৮৩৫ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং ১৯১০ সালে মারা যান। গিরিশচন্দ্রের জন্মেরও আগে, 1১৮০৮ সালে মাওলানা আমির উদ্দিন বসুনিয়া কুরআনকে বাংলায় অনুবাদ করার কাজ শুরু করেছিলেন।

তারপরে ১৮৩৬ সালে, গিরিশচন্দ্র সেনের জন্মের এক বছর পরে, মৌলভী নাঈমুদ্দীন সম্পূর্ণ কোরআন মাজিদের বাংলা অনুবাদ শেষ করেন।

যে ব্যক্তি আরবী জানে না, আরবী ব্যাকরণ জানে না - প্রচার করে যে সে কুরআন অনুবাদ করেছে তা বোকামি।

বাংলাভাষীদের মধ্যে এটি বহুলভাবে জানা যায় যে ভাই গিরিশ চন্দ্র সেন কুরআনের প্রথম বাংলা অনুবাদক ছিলেন। এই প্রচারের কিছু কারণ ছিল। ব্রিটিশ শাসনামলে ব্রাহ্মণ্যবাদের জোয়ার এদেশে এসেছিল।

গিরিশচন্দ্র সেন, গোঁড়া হিন্দু, একবার হিন্দু ধর্ম থেকে ব্রাহ্মণ্যবাদে রূপান্তরিত করেছিলেন। ব্রাহ্মণ্যবাদ এদেশে একটি নতুন ধর্ম ছিল। তাই গিরিশচন্দ্র নিজেই জনগণের মধ্যে এই ধর্ম প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে অর্থের প্রয়োজন হয়। কোথা থেকে আসবে! তিনি ছিলেন পারস্যের পন্ডিত।

 তিনি মুসলমানদের পকেট থেকে অর্থ বের করার জন্য বেশ কয়েকটি ইসলামিক বই লিখেছিলেন এবং প্রকাশক হিসাবে পবিত্র কুরআনও প্রকাশ করেছিলেন। মুসলমানরাও এই বইটি অনেক কিনেছিল। ফলস্বরূপ, বাংলাভাষী কোরআন মাজিদ তাদের কাছে পৌঁছেছিল যারা কুরআন মাজেদের বাংলা অনুবাদ পেতে চেয়েছিলেন।

ব্রাহ্মসমাজ হিন্দু এমনকি ব্রিটিশরাও তাঁকে যথেষ্ট সমর্থন করেছিলেন। ফলস্বরূপ, লোকেরা মনে করেছিল যে গিরিশ চন্দ্র সেন পবিত্র কোরআনের প্রথম বাংলা অনুবাদক।

 বাস্তবে, যদিও কম লোকই জানত যে পবিত্র কুরআনের প্রথম বাংলা অনুবাদক মৌলভী মোহাম্মদ নাঈমুদ্দীন, এর ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ ছিল না।

গিরিশচন্দ্র ব্রাহ্মণ্যবাদের প্রচারে কুরআনের অনুবাদ বিক্রি করে উপার্জিত অর্থ ব্যয় করতেন। ফলস্বরূপ, ব্রাহ্মণ্যবাদ প্রচারের মিশনের সাথে কুরআন বিক্রয়ের গভীর সম্পর্ক ছিল।

আপডেট নিউজ পড়তে ক্লিক করুনঃ 

মৌলভী মোহাম্মদ নাঈমুদ্দীনএকজন মুসলমান ছিলেন। তিনি নিজের উদ্যোগে কোরআনকে বাংলায় অনুবাদ করেছিলেন। এটি প্রচার করার জন্য গিরিশচন্দ্র সেনের মতো কোনও মিশন ছিল না। যার কারণে তাঁর প্রচার সীমাবদ্ধ ছিল।

এভাবে আল-কুরআনের প্রথম বাংলা অনুবাদক হওয়ায় গিরিশচন্দ্র সেনের মতো প্রচার পেতে পারেননি মৌলভী মোহাম্মদ নাইমুদ্দিন।

আরও পরুনঃ রবিউল আউয়াল এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য ।

কুরআন কিয়ামতের দিন পাঠকের জন্য সুপারিশ করবে.

 

কুরআন কিয়ামতের দিন পাঠকের জন্য সুপারিশ করবে.

কুরআন কিয়ামতের দিন পাঠকের জন্য সুপারিশ করবে.

কুরআন কিয়ামতের দিন পাঠকের জন্য সুপারিশ করবে। কুরআন একটি পবিত্র এবং দুর্দান্ত বই যা নিখুঁত স্বর্গীয় জ্ঞানে সমৃদ্ধ। এর লেখক হলেন এক মহান  যার কাছে সমস্ত তথ্য, তত্ত্ব এবং সঠিক জ্ঞান রয়েছে। এই দুর্দান্ত বইটিতে সন্দেহের অবকাশ নেই। আল্লাহর ইরশাদ, ‘এটি কিতাব যাতে যাতে সন্দেহ না হয়।’ সূরা বাকারা, আয়াত -১। কুরআনের সংরক্ষণ নিশ্চিত করার জন্য, আল্লাহ বলেছেন, "আমি এই উপদেশ উপদেশ গ্রন্থটি অবতীর্ণ করেছি এবং আমি এর অভিভাবক।" সূরা আল-হিজর, ৯ নং আয়াত আবার, আল্লাহ্‌ আশ্বাস দিয়েছেন যে কেউ চাইলে কুরআন ধ্বংস করতে পারে না। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তারা মুখের নিঃশ্বাসে আল্লাহর নূতনাকে নিভিয়ে দিতে চায়। আল্লাহ তাঁর নূরকে পুরোপুরি বিকাশ করবেন, যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে না। সূরা আস সাফফাত, আয়াত 6।

আপনি যদি ইসলামিক সম্পর্কিত সংবাদ পড়তে চান তবে এখানে ক্লিক করুন

কুরআনের সত্যতা প্রমাণের জন্য আল্লাহ বিশ্ববাসীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেছেন, ‘আমি যদি আমার বান্দার প্রতি এই কিতাবটি প্রকাশ করেছি যা সম্পর্কে আপনার কোন সন্দেহ থাকে, তবে এর মতো একটি সূরা রচনা করুন। যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক তবে আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের সাহায্যকারীদের সাথে নিয়ে যাও। ‘সূরা বাকারা, আয়াত ২৩। আজও কেউ প্রমাণ করতে পারে না যে কোরআন আল্লাহর কিতাব নয়। মহান গ্রন্থ আল-কুরআন মহান রব্বুল আলামীন এর পবিত্র ও শ্রদ্ধেয় গ্রন্থ।

আপনি যদি সংবাদ পড়তে চান তবে এখানে ক্লিক করুন

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন: "নিশ্চয় এটি সম্মানিত কোরআন।" সুতরাং, মানদারগণ এই বইয়ের প্রতি সর্বোচ্চ নিষ্ঠা ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবে। এটাই মানের দাবি। আল্লাহর ইরশাদ, 'শ্রুতিমধুর যে কেউ যদি আল্লাহর নামানুসারে বস্তুর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে তবে তা তার অন্তরে আল্লাহর ভয়ের কারণে।' সূরা হজ, ৩২ নং আয়াত। কুরআন মর্যাদার প্রতীক এবং মুসলমানদের সম্মান। মুসলমানদের শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা কোরআনের কারণে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 'তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে ভাল ও সম্মানিত ব্যক্তি হ'ল তিনি নিজে যিনি কুরআন শিখেন এবং তা অন্যকে শিক্ষা দেন।' বুখারী, হা / ৪.৯৯ এবং মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 'এই কুরআনের মাধ্যমে আল্লাহ অনেক জাতিকে উত্থিত করেছেন এবং তাদেরকে উচ্চ মর্যাদা দান করেছেন এবং বহু জাতি এ কিতাবের অবজ্ঞান ও অবজ্ঞার কারণে পতিত হয়েছে।' মুসলিম, হা / ১৯৩৩. শিক্ষা ব্যতিরেকে কুরআনে মুসলমানদের কোন বিশেষ মর্যাদা, মর্যাদা ও মূল্য নেই।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 'যে ব্যক্তির শরীরে কুরআনের কোন অংশ নেই সে পরিত্যক্ত বাড়ির মতো।' তিরমিযী, হা / ২৯১৩. তাঁর দেহ অনিষ্টের আশ্রয় এবং মন্দ প্রতিভাবন্. বিচারের দিন পাঠককে কোরআনের সুপারিশ করার ক্ষমতা দেওয়া হবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা কোরআন তেলাওয়াত করবে; কারণ কুরআন কিয়ামতের দিন তার পাঠকের জন্য সুপারিশ করবে। ‘মুসলিম, এইচ / 1910।

মানুষের উপর কোরআনের হক।

 

মানুষের উপর কোরআনের হক।

মানুষের উপর কোরআনের হক।

মানুষের উপরে কোরআনের সত্যতা। কুরআন বিশ্ব মানবতার জন্য এক অবর্ণনীয় নেয়ামত। হারানো মানুষের গাইড। একটি বই যা সরল পথে ডাকে। এই কোরআন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট অবতীর্ণ হয়েছে। এটি ইসলামের অনেক বিধি-বিধান শিখিয়েছে।

এ সম্পর্কে ইরশাদ হচ্ছে, তিনি (আল্লাহ) পরম করুণাময়, যিনি কুরআন শিখিয়েছেন। সূরা আর-রহমান। কোরআন বিশ্বের অন্যতম একটি বই যার মাধ্যমে আরবের সেই বর্বর জাতি সৌভাগ্যবান জাতিতে পরিণত হয়েছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআনুল কারীম দ্বারা বিশ্বের বৃহত্তম মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। এই কুরআনে বান্দা সম্পর্কে বেশ কয়েকটি সত্য রয়েছে, যা উপলব্ধি করতে হবে। এমন অনেক অধিকার রয়েছে যা যদি কেউ তা পূরণ না করে তবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে অভিযোগ করবেন।

কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, ‘এবং রসূল বলবেন, (কিয়ামতের দিন) হে আমার রব! নিশ্চয় আমার সম্প্রদায় এ কোরআনকে প্রত্যাখ্যান করেছে; সূরা ফুরকান। মানুষের উপর কুরআনের অধিকার এক। কুরআনে বিশ্বাস করা: কুরআনে বিশ্বাস করা মানে কুরআন Godশ্বরের বাণী, এটি আকাশের শেষ গ্রন্থ এবং এই গ্রন্থের মাধ্যমে স্বর্গীয় সমস্ত বই রহিত হয়ে গেছে। কুরআন বিশ্ববাসীর জন্য পথনির্দেশক এবং আল্লাহর নূর।

Read English Update News

কুরআন বলে, ‘সুতরাং আল্লাহ ও তাঁর রসূল এবং আমরা যে আলোকে অবতীর্ণ করেছি, তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর। তোমরা যা কর সে বিষয়ে আল্লাহ সর্বজ্ঞ। '

দুই। কীভাবে কুরআন সঠিকভাবে পড়তে হবে তা জানা: প্রত্যেক মুসলমানের উচিত কিভাবে কুরআন পড়তে হয়। কারণ এটি শেখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, "তোমার রব যিনি সৃষ্টি করেছেন, তার নামে পড়ুন।"

তিন. কুরআন তেলাওয়াত ও শ্রবণ: কুরআন তেলাওয়াত কোরআনের অন্যতম অধিকার। এ সম্পর্কে কুরআন এভাবে নির্দেশ দেয়, "তোমরা যে কিতাবটি অবতীর্ণ হয়েছে তা তেলাওয়াত কর"। সূরা আনকাবুত।

চার। অন্যকে কুরআন শিক্ষা: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অন্যতম কর্তব্য ছিল মানুষকে কুরআন শরীফ শিক্ষা দেওয়া। হজরত ওসমান (রা।) - এর কর্তৃত্বে বর্ণিত আছে যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম ব্যক্তি যিনি নিজে কুরআন শরীফ শিক্ষা দেন এবং অন্যকে শিক্ষা দেন।

পাঁচ। কুরআন মুখস্থ: কুরআন মুখস্থ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা কোরআন রাখার দায়িত্ব নিয়েছেন। হেফাজতের অন্যতম ধরণ হ'ল কুরআন বান্দাদের হাত থেকে রক্ষা করা। যার মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর কুরআন সংরক্ষণ করছেন এবং তা করবেন। ইরশাদ হচ্ছে, "অবশ্যই আমি কুরআন নাযিল করেছি এবং আমিই এর অভিভাবক।"

ছয় কুরআনকে বোঝা ও বোঝা: কুরআনের অর্থ বোঝা ও বোঝা কোরআনের অন্যতম অধিকার। যদি কেউ কুরআনের অর্থ বুঝতে না পারে তবে কেউ কুরআন নাজিলের উদ্দেশ্য ও দাবি পূরণ করতে সক্ষম হবে না। যদি আপনি বুঝতে না পারেন তবে আপনি কুরআনের আসল মজা খুঁজে পাবেন না। সুতরাং কুরআন বুঝতে হলে আমাদের শব্দের অর্থ, আয়াতের ব্যাখ্যা, এর নাজিলের কারণ বা প্রসঙ্গটি জানতে হবে। যেহেতু সেই সময় আরবী ভাষা বিখ্যাত ছিল তাই আরবী ভাষায় কুরআন অবতীর্ণ হয়েছিল। বর্ণিত আছে, "নিশ্চয়ই আমরা এটিকে আরবী কুরআন হিসাবে নাযিল করেছি যাতে তোমরা বুঝতে পার।" সূরা ইউসুফ।

আরও পড়তে এখানে ক্লিক করুনঃ  ধর্ষণ: ভুল পরিভাষা, ভুল প্রতিকার

শুক্রবারে সূরা কাহাফ তিলাওয়াতের গুরুত্ব।

শুক্রবারে সূরা কাহাফ তিলাওয়াতের গুরুত্ব।

 শুক্রবারে সূরা কাহাফ তিলাওয়াতের গুরুত্ব। 

পবিত্র কুরআনে সূরা আল-কাহাফ সু-আলোচিত সূরা। এই সূরার বিশেষ তাত্পর্য থাকার কারণে শুক্রবারে তেলাওয়াত করতে হবে। এই সূরাটিতে চারটি সূক্ষ্ম প্রলোভনের কথাও বলা হয়েছে।

ফিতনা চার - এক। ধর্মের ফিটনা মানে গুহাবাসীর ঘটনা। 

দুই। সম্পদের ফেতনা। এটি দুটি পার্কের মালিকদের ক্ষেত্রে।

 তিন. ইলম বা জ্ঞান কেন্দ্রিক ফেতনা, অর্থাৎ খিজরের সাথে মুসা (আ।) - এর ঘটনা।

চার। রাজ্যের ফিটনা। এটি জুলকারনাইনের ঘটনাগুলিকে বোঝায়। এই চারটি ফিটনা দাজ্জালে পাওয়া যাবে। যে পবিত্র পবিত্র শুক্রবারে সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করবে, আল্লাহ তাকে দাজ্জালের প্রলোভন থেকে রক্ষা করুন।

সূরা আল-কাহাফ তিলাওয়তে হাদীস শরীফের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ গুণাবলী উল্লেখ রয়েছে শ এক। করুণা ও শান্তির বৃষ্টি। একজন সাহাবী তাঁর ঘরে বসে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করছিলেন, তার একটি পোষা প্রাণী ঘরে প্রবেশ করছিল। অতঃপর তিনি toশ্বরের দিকে প্রত্যাবর্তন করলেন এবং জীব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য প্রার্থনা করলেন। হঠাৎ আকাশ থেকে বৃষ্টি শুরু হল। লোকটি রাসূলুল্লাহর কাছে ঘটনাটি বর্ণনা করল। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেছিলেন যে কুরআন তেলাওয়াত করাই রহমতের কারণ ছিল। অর্থাৎ মেঘ থেকে হঠাৎ বৃষ্টি হওয়া মহান আল্লাহ তায়ালার করুণা ও শান্তি is এই সময়ে স্বর্গদূতরা স্বর্গ থেকে নেমে এল। এই দেখে প্রাণীটি দৌড়াচ্ছিল। এই ঘটনার সত্যতা যাচাই করার জন্য ইমাম মুসলিম (রহ।) তাঁর সহিহ মুসলিম শরীফে পৃথক বয়ান দিয়েছেন।

দুই। কিয়ামতের আলো পাওয়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করবে, কিয়ামতের দিন তার পক্ষে আলো হবে।

তিন. দাজ্জাল থেকে মুক্তি। দাজ্জালের ফিটনা সবচেয়ে বড়। প্রত্যেক নবী দাজ্জালের বিরুদ্ধে তাঁর উম্মতকে সতর্ক করেছেন।

এ পুণ্য অর্জনের জন্য পুরো সূরা আল-কাহাফ তেলাওয়াত করা দরকার কি না তা নিয়ে একাধিক বর্ণনা রয়েছে। মুল বক্তব্যটি, সম্ভব হলে শুক্রবার পুরো সূরা আল-কাহাফ তিলাওয়াত করুন; অন্যথায় তিনি সূরা কাহাফের প্রথম দশটি আয়াত তেলাওয়াত করবেন।

আর পরুনঃ জরের নামাজের উপকারিত 

পবিত্র কুরআনের ১০০ টি নির্দেশ। যা প্রত্যেক মুসলমানের জানা থাকা উচিত।

 
পবিত্র কুরআনের ১০০ টি নির্দেশ। যা প্রত্যেক মুসলমানের জানা থাকা উচিত।

পবিত্র কুরআনের ১০০ টি নির্দেশ। যা প্রত্যেক মুসলমানের জানা থাকা উচিত। 

০১.. কথোপকথনে অভদ্রতা করবেন না। (০৩ঃ১৫৯)

০২.. আপনার ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ করুন (০৩ঃ১৩৪)।

০৩.অন্যদের সাথে ভাল ব্যবহার করুন। (০৪ঃ৩৬) 

০৪. অহংকার করবেন না। (০৭ঃ ১৩) 

০৫. অন্যকে তাদের ভুলের জন্য ক্ষমা করুন (০৭ঃ১৯৯)।

০৬.বড়দের সাথে আস্তে আস্তে এবং শান্তভাবে কথা বলুন। (২০৪ঃ৪৪)

০৭. জোরে কথা বলবেন না। (৩১ঃ১৯)

০৮.অন্যকে উপহাস করবেন না (৪৯৪ঃ১১)

০৯. পিতামাতার প্রতি দায়িত্বের সাথে আচরণ করুন। (১৭ঃ২৩)।

১০.পিতামাতার প্রতি অসম্মানজনক কথা বলবেন না। (১৭ঃ২৩)।

১১. বিনা অনুমতিতে আপনার পিতামাতার ঘড়ে প্রবেশ করবেন না। (২৪ঃ৫৮)

১২. যখন আপনি কোনও ধার নেন, তখন এটি লিখে রাখুন। (০২ঃ২৮২) 

১৩. অন্ধভাবে কাউকে অনুসরণ করবেন না। (২৪ঃ১৭০)।

১৪.  সময় মত ধার পরিশোধ না করতে পারলে,  পরিশোধের সময় বাড়ান। (২৪ঃ২৮০)।

১৫.  কখনই সুদের প্রতি আগ্রহী হবেন না। (০২ঃ২৭৫)।

১৬.  কখনও ঘুষের সাথে জড়িত হবেন না। (০২ঃ১৮৮)।

১৭. প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবেন না। (০২ঃ১৭৭)

১৮.  আস্থা রাখুন (০২ঃ২৮২)

১৯. সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করবেন না। (০২ঃ৪২)।

২০.ন্যায় এঁর সাথে বিচার করুন। (৪০ঃ১৫৮)

২১.  ন্যায়বিচারকের পক্ষে থাকুন। (০৪ঃ১৩৫)

 ২২. মৃত ব্যক্তির সম্পদ তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিতরণ করুন। (৪০ঃ০৭)

২৩. মহিলাদের উত্তরাধিকারের অধিকার অনুধাবন করুন। (৪০ঃ০৭)

২৪.  এতিমদের সম্পত্তি গ্রাস করবেন না। (৪০ঃ১০)

২৫. এতিমদের রক্ষা করুন। (০২ঃ২২০)।

২৬. অন্যের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করবেন না। (৪০ঃ২৯)।

২৭.  মানুষের মধ্যে দ্বন্দ্ব সমাধান করার চেষ্টা করুন। (৪৯৪ঃ০৯)

২৮. সন্দেহ এড়ানোর চেষ্টা করুন। (৪৯৪ঃ১২)

২৯.  গুপ্তচরবৃত্তি করবেন না, অপবাদ প্রচার করবেন না। (৪৯০ঃ১২)

৩০.  আল্লা্হ্ আইন অনুযায়ী বিচার করুন । (০৫ঃ৪৫৬)।

৩১. দাতব্য সম্পদ ব্যয় করুন। (৫৭ঃ৭)

৩২.  দরিদ্রদের খাবার খাওয়ান। (১০৭ঃ০৩) 

৩৩.  অভাবীদের অভাব পূরণ করার উপায়টি দেখান। (০২ঃ২৭৩)।

৩৪.  অপচয় করবেন না। (১৭ঃ২৯)

৩৫.  খটা দিবেন না । (২৪ঃ২৬৪)।

৩৬.  অতিথিকে সম্মান করুন। (৫১৪ঃ২৬)

৩৭.  কেবল আপনার নিজে ভালো কাজ করুন এবং তারপরে অন্যকে ভালো কাজ করার আদেশ দিন। (০২ঃ৪৪)

৩৮.  কাউকে তিরস্কার করবেন না। (০২ঃ৬০)

৩৯.  লোকদেরকে মসজিদে যাওয়া থেকে বিরত রাখবেন না। (০২ঃ১৪৪)

৪০. কেবল তাদের সাথে লড়াই করুন যারা আপনাকে সাথে লড়াই করে (০২ঃ১৯০)

৪১. যুদ্ধের শিষ্টাচার অনুসরণ করুন। (২৪ঃ১৯১)।

৪২. যুদ্ধ থেকে পলায়ন করবেন না । (০৭ঃ১৫)

৪৩. ধর্ম নিয়ে বেশি বাড়া বারি করবেন না। (২৪ঃ২৫৬)

৪৪. সমস্ত নবী উপর বিশ্বাস রাখুন। (০২ঃ২৮৫)

৪৫.  স্ত্রীর রিতুস্রাবের সময় সহবাস করবেন না। (০২ঃ২২২)।

৪৬. ​​পুরো দুই বছর আপনার শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান। (২৪ঃ২৩৩)।

৪৭.  ​​অননুমোদিত উপায়ে যৌনতা করবেন না। (১৭ঃ৩২)

৪৮.  ​​যোগ্যতা অনুযায়ী নেতৃত্বের দায়িত্ব অর্পণ করুন। (০২ঃ২৪৭)।

৪৯. যে যতটা সামলাতে পারে তার চেয়ে বেশি কিছু করতে বাধ্য করবেন না। (০২ঃ২৮৬)

.৫০. বিভাজন উত্সাহিত করবেন না। (০৩ঃ১০৩)

৫১. মহাবিশ্বের বিস্ময় ও সৃষ্টি সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করুন (০৩ঃ১৯১)।

৫২.  অমল অনুসারে পুরুষ ও মহিলা সমান। পুরষ্কার পাবেন ; সুতরাং বেশি বেশি আমল করুন। (০৩ঃ১৯৫)

৫৩.  'মাহরাম' আত্মীয়কে বিয়ে করবেন না। (০৪ঃ২৩)। 

৫৪. পুরুষ হিসাবে মহিলাদের রক্ষা করুন। (০৪ঃ৩৪)।

৫৫. কৃপণ হয়ে উঠবেন না। (০৪ঃ৩৭)

৫৬. মনে মনে রাগ পোষণ করবেন না। (০৪ঃ৫৪)

৫৭. একে অপরকে হত্যা করবেন না। (০৪ঃ৯২)।

৫৮. জালিয়াতির পক্ষে ওকালতি করবেন না। (০৪ঃ১০৫) 

৫৯. পাপ কাজ এবং আগ্রাসনে সহযোগিতা করবেন না। (০৫ঃ০২)

৬০.  সৎ কাজের সহযোগিতা করুন । (৫৪ঃ০২)।

৬১. সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেই কোন কিছু ন্সত্য বলে গ্রহণ করবেন না। (০৬ঃ১১৬)

৬২.  ন্যায়বিচার করুন। (০৫ঃ০৮)

৬৩. অপরাধীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিন। (০৫ঃ৩৮)

৬৪.  পাপ এবং বেআইনী কাজের বিরুদ্ধে লড়াই করুন (০৫ঃ৬৩)।

৬৫.  মৃত প্রাণী, রক্ত, শুয়োরের মাংস খাওয়া থেকে দূরে থাকুন। (৫৪ঃ০৩)।

৬৬. ড্রাগ এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন (৫:৯০)

৬৭.  জুয়া খেলবেন  না। (০৫ঃ৯০)

৬৮. অন্য ধর্মের দেবতাদের অপমান করবেন না। (০৬ঃ১০৮)

৬৯.  ক্রেতাকে প্রতারণার উদ্দেশ্যে আকারের চেয়ে কম দিবেন না। (০৬ঃ১৫২)

৭০.  খাওয়া ও দাওয়া; তবে অপচয় করবেন না। ০৭ঃ৩১)

৭১. নামাজের সময় ভাল পোশাক পরুন। (০৭ঃ৩১)।

৭২.  আশ্রয়প্রার্থীকে রক্ষা করুন, সহায়তা করুন। (৯৪ঃ০৬)

৭৩.পবিত্রতা ধরে থাকুন। (০৯ঃ১০৮)

৭৪.  আল্লাহ্‌র করুণার আশা কখনও ত্যাগ করবেন না। (১২ঃ৮৭)।

৭৫. আপনি যদি অজান্তে কোনও ভুল করেন তবে  আল্লাহ্‌র কাছে ক্ষমা আশা করুন  (১৬ঃ১১৯)

৭৬.  জ্ঞান এবং মঙ্গল এঁর সঙ্গে মানুষকে  আল্পলাহ্ পথে ডাকুন। (১৬ঃ১২৫৮)

৭৭.  অন্যের দোষ কাভ বহন করতে হয় না, বিশ্বাস করুন। (১৭ঃ১৫)

৭৮. দারিদ্র্যের ভয়ে আপনার বাচ্চাদের হত্যা করবেন না। (১৭ঃ৩১)

৭৯. আপনি জানেন না এমন কারোর পিছনে যাবেন না। (১৭ঃ৩৮)

৮০.  অকেজো কাজ থেকে দূরে থাকুন। (২৩:০৩)

 ৮১. বিনা অনুমতিতে কারও বাড়িতে প্রবেশ করবেন না। (২৪ঃ২৭)।

 ৮২.  বিশ্বাস করুন যে, যারা আল্লাহকে দৃভাবে বিশ্বাস করেন তাদের জন্য আল্লাহ সুরক্ষা দান করবেন। (২৪ঃ৫৫)।

 ৮৩.  মাটিতে আলতো  চলা ফেরা করুন। (২৫ঃ৬৩)

 ৮৪.  বিশ্বে আপনার অংশ উপেক্ষা করুন। নং (২৮ঃ ৭৭)

৮৫. আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন উপাস্যকে ডাকবেন না। (২৮ঃ ৮৮)।

 ৮৬.  সমকামিতার জঘন্য কাজ জড়িত হবেন না। (২৯ঃ২৯)

 ৮৭.  সৎকর্মের আদেশ দিন, মন্দ কাজকে নিষেধ করুন। (৩১ঃ১৭)

 ৮৮. মাটিতে গর্ব করে চলবেন না। (৩১ঃ১৮)

৮৯. মহিলাদের উজ্জ্বল পোশাক প্রদর্শন করা উচিত নয়। (৩৩৪ঃ৩৩)।

৯০. আল্লাহ্‌ সমস্ত পাপ, বিশ্বাসকে ক্ষমা করেন। এটা বিশ্বাস রাখুন। (৩৯৪ঃ৫৩)

৯১.আল্লাহ্‌র করুণা থেকে হতাশ হবেন না। (৩৯ঃ৫৩)

 ৯২. ভাল দ্বারা মন্দ প্রতিরোধ করুন। (৪১ঃ৩৪)

 ৯৩. পারস্পরিক পরামর্শের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন। (৪২ঃ১৩)

 ৯৪. সেরা ব্যক্তি হতে আমল করুন । (৯৪ঃ১৩)

 ৯৫.  সন্ন্যাসী হবেন না। (৫৭ঃ২৭)

৯৬.  জ্ঞানের সন্ধানে নিযুক্ত থাকুন। (৫৮ঃ১১)।

৯৭.  অমুসলিমদের সাথে সদয় এবং নিরপেক্ষ আচরণ করুন। (৬০ঃ০৮)।

৯৮. লোভ থেকে নিজেকে বাঁচান। (৬৪ঃ১৬)

 ৯৯.  আল্লাহ্‌র কাছে বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করুন। (৭৩ঃ২০)

১০০. ভিক্ষুককে ফিরিয়ে দেবেন না। (93:10)

মহান নাল্লাহ পাক আমাদেরকে এই সব আমল করার তাউফিক দান করুন । আমিন

আরও পড়তে এখানে ক্লিক করুনঃ করোনাঃ মহান আল্লাহ্‌র শুকরিয়া আদায় করতে হবে

সূরা আল ফাতিহা ঃ সকল রোগের শেফা।

 
সূরা আল ফাতিহা  ঃ সকল রোগের শেফা।

সূরা আল ফাতিহা  ঃ সকল রোগের শেফা।

  • সূরা আল ফাতিহা (আরবি ভাষায়: سورة الفاتحة) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ১ নম্বর সূরা, এর আয়াত সংখ্যা ৭ এবং রূকু সংখ্যা ১। ফাতিহা শব্দটি আরবি “ফাতহুন” শব্দজাত যার অর্থ “উন্মুক্তকরণ”। এটি আল্লহ’র তরফ থেকে বিশেষ উপহার। সূরা ফাতিহা অন্যান্য সূরার ন্যায় বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম দিয়ে শুরু। আল ফাতিহা সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে বিধায় মক্কী সূরা হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ।

  •  বাংলা আয়াতসমূহ:

1. শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।

2. যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তা’ আলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা।

3. যিনি নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু।

4. যিনি বিচার দিনের মালিক।

5. আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি।

6. আমাদেরকে সরল পথ দেখাও।

7. সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে। – আমিন [১]

  •  নামকরণ:

এ সূরার বিষয়বস্তুর সাথে সামঞ্জস্য রেখেই এর এই নামকরণ করা হয়েছে। যার সাহায্যে কোন বিষয়, গ্রন্থ বা জিনিসের উদ্বোধন করা হয় তাকে ‘ফাতিহা’ বলা হয়। অন্য কথায় বলা যায়, এ শব্দটি ভূমিকা এবং বক্তব্য শুরু করার অর্থ প্রকাশ করে।

  • নাযিল হওয়ার সময়-কাল:

এটি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুওয়াত লাভের একেবারেই প্রথম যুগের সূরা। বরং হাদীসের নির্ভরযোগ্য বর্ণনা থেকে জানা যায়, এটিই মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর নাযিলকৃত প্রথম পূর্ণাঙ্গ সূরা। এর আগে মাত্র বিছিন্ন কিছু আয়াত নাযিল হয়েছিল। সেগুলো সূরা ‘আলাক্ব’, সূরা ‘মুয্যাম্মিল’ ও সূরা ‘মুদ্দাস্সির’ ইত্যাদিতে সন্নিবেশিত হয়েছে।

  •  বিষয়বস্তু:

আসলে এ সূরাটি হচ্ছে একটি দোয়া। যে কোন ব্যক্তি এ গ্রন্থটি পড়তে শুরু করলে আল্লাহ প্রথমে তাকে এ দোয়াটি শিখিয়ে দেন। গ্রন্থের শুরুতে এর স্থান দেয়ার অর্থই হচ্ছে এই যে, যদি যথার্থই এ গ্রন্থ থেকে তুমি লাভবান হতে চাও, তাহলে নিখিল বিশ্ব-জাহানের মালিক আল্লাহর কাছে দোয়া এবং সাহায্য প্রার্থনা করো।

মানুষের মনে যে বস্তুটির আকাংখা ও চাহিদা থাকে স্বভাবত মানুষ সেটিই চায় এবং সে জন্য দোয়া করে। আবার এমন অবস্থায় সে এই দোয়া করে যখন অনুভব করে যে, যে সত্তার কাছে সে দোয়া করছে তার আকাংখিত বস্তুটি তারই কাছে আছে। কাজেই কুরআনের শুরুতে এই দোয়ার শিক্ষা দিয়ে যেন মানুষকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, সত্য পথের সন্ধান লাভের জন্য এ গ্রন্থটি পড়, সত্য অনুসন্ধানের মানসিকতা নিয়ে এর পাতা ওলটাও এবং নিখিল বিশ্ব-জাহানের মালিক ও প্রভু আল্লাহ হচ্ছেন জ্ঞানের একমাত্র উৎস— একথা জেনে নিয়ে একমাত্র তাঁর কাছেই পথনির্দেশনার আর্জি পেশ করেই এ গ্রন্থটি পাঠের সূচনা কর।

এ বিষয়টি অনুধাবন করার পর একথা সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, কুরআন ও সূরা ফাতিহার মধ্যকার আসল সম্পর্ক কোন বই ও তার ভূমিকার সম্পর্কের পর্যায়ভুক্ত নয়। বরং এ মধ্যকার আসল সম্পর্কটি দোয়া ও দোয়ার জবাবের পর্যায়ভুক্ত। সূরা ফাতিহা বান্দার পক্ষ থেকে একটি দোয়া। আর কুরআন তার জবাব আল্লাহর পক্ষ থেকে। বান্দা দোয়া করে, হে মহান প্রভু! আমাকে পথ দেখাও। জবাবে মহান প্রভু এই বলে সমগ্র কুরআন তার সামনে রেখে দেনঃ এই নাও সেই হিদায়াত ও পথের দিশা যে জন্য তুমি আমার কাছে আবেদন জানিয়েছ।

  • বৈশিষ্ট্য:

এই সূরাটি কোরআনের একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ সূরা। প্রথমতঃ এ সূরা দ্বারাই পবিত্র কোরাআন আরম্ভ হয়েছে এবং এ সূরা দিয়েই সর্বশ্রেষ্ঠ এবাদত নামায আরম্ভ হয়। অবতরণের দিক দিয়েও পূর্ণাঙ্গ সূরারূপে এটিই প্রথম নাযিল হয়। সূরা ‘ইকরা’, ‘মুয্যাম্মিল’ ও ‘মুদ্দাস্সিরের’ ক’টি আয়াত অবশ্য সূরা আল-ফাতিহার পূর্বে অবতীর্ণ হয়েছে। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ সূরারূপে এ সূরার অবতরণই সর্বপ্রথম। যে সকল সাহাবী (রাঃ) সূরা আল-ফাতিহা সর্বপ্রথম নাযিল হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন, তাঁদের সে বক্তব্যের অর্থ বোধহয় এই যে, পরিপূর্ণ সূরারূপে এর আগে আর কোন সূরা নাযিল হয়নি। এ জন্যই এ সূরার নাম ‘ফাতিহাতুল-কিতাব’ বা কোরআনের উপক্রমণিকা রাখা হয়েছে।

‘সূরা আল-ফাতিহা’ এদিক দিয়ে সমগ্র কোরআনের সার-সংহ্মেপ। এ সূরায় সমগ্র কোরআনের সারমর্ম সংহ্মিপ্তকারে বলে দেয়া হয়েছে। কোরআনের অবশিষ্ট সূরাগুলো প্রকারান্তরে সূরা ফাতিহারই বিস্তৃত ব্যাখ্যা। তাই এ সূরাকে সহীহ হাদীসে ‘উম্মুল কিতাব’, ‘উম্মুল কুরআন’, ‘কোরানে আযীম’ বলেও অভিহিত করা হয়েছে।[২] হযরত রসূলে কারীম (সাঃ) এরশাদ করেছেন যে –

“যার হাতে আমার জীবন-মরণ, আমি তাঁর শপথ করে বলছি, সূরা আল-ফাতিহার দৃষ্টান্ত তাওরাত, ইনজীল, যাবুর প্রভৃতি অন্য আসমানী কিতাবে তো নেই-ই, এমনকি পবিত্র কোরআনেও এর দ্বিতীয় নেই।”

ইমাম তিরমিযী আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রসূলে কারীম (সাঃ) আরো বলেছেন যে –

“সূরায়ে ফাতিহা প্রত্যেক রোগের ঔষধবিশেষ।”

  •  সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা:

সূরা আল-ফাতিহার প্রথমে বর্ণনা করা হয়েছে যে, এ সূরার প্রথম তিনটি আয়াতে আল্লাহ্র প্রশংসা ও তারীফের বর্ণনা করা হয়েছে এবং এর তফসীরে একথা সুস্পষ্ট হয়েছে যে, তা’রীফ ও প্রশংসার সাথে সাথে ঈমানের মৌলিক নীতি ও আল্লাহ্র একত্ববাদের বর্ণনাও সূহ্মভাবে দেয়া হয়েছে। তৃতীয় আয়াতে এর দু’টি শব্দে তারীফ ও প্রশংসার সাথে সাথে ইসলামের বিপ্লবাত্মক মহোত্তম আকীদা যথা কিয়ামত ও পরকালের বর্ণনা প্রমাণসহ উপস্থিত করা হয়েছে। চতুর্থ আয়াতের এক অংশে তা’রীফ ও প্রশংসা এবং অপর অংশে দোয়া ও প্রার্থনা করা হয়েছে। মানবজীবন তিনটি অবস্থায় অতিবাহিত হয় – অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত।

পূর্বের তিনটি আয়াতের মধ্যে الْحَمْدُ للّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ এবং الرَّحْمـنِ الرَّحِيمِ – এ দু’টি আয়াতে মানুষকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, অতীতে সে কেবল মাত্র আল্লাহ্র মুখাপেক্ষী ছিল, বর্তমানেও সে একমাত্র তারই মুখাপেক্ষী। অস্তিত্বহীন এক অবস্থা থেকে তিনি তাকে অস্তিত্ব দান করেছেন। পরবর্তী আয়াতে مَـالِكِ يَوْمِ الدِّينِ – এর মধ্যে জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, ভবিষ্যতেও সে আল্লাহ্র মুখাপেক্ষী। প্রতিদান দিবসে আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো সাহায্য পাওয়া যাবে না। একজন বুদ্ধিমান ও বিবেকবান ব্যক্তি মনের গভীরতা থেকেই এ স্বতঃস্ফুর্ত স্বীকৃতি উচ্চারণ করছে যে, আমরা তোমাকে ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করি না।

এ মৌলিক চাহিদাই إِيَّاكَ نَعْبُدُ তে বর্ণনা করা হয়েছে। অভাব পূরণকারী একক সত্তা আল্লাহ্, সুতরাং নিজের যাবতীয় কাজে সাহায্যও তার নিকট প্রার্থনা করবে। এ মৌলিক চাহিদাই বর্ণনা وإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ -এ করা হয়েছে। মোটকথা, এ চতুর্থ আয়াতে একদিকে আল্লাহ্র তা’রীফ ও প্রশংসার সাথে একথারও স্বীকৃতি রয়েছে যে, ইবাদত ও শ্রদ্ধা পাওয়ার একমাত্র তিনিই যোগ্য। অপরদিকে তার নিকট সাহায্য ও সহ্যয়তার প্রার্থনা করা এবং তৃতীয়তঃ আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত না করার শিক্ষাও দেয়া হয়েছে। শেষ তিনটি আয়াতে মানুষের দোয়া ও আবেদনের বিষয়বস্তু এবং এক বিশেষ প্রার্থনা পদ্ধতি শিক্ষা দেয়া হয়েছে। তা হচ্ছে –

اهدِنَــــا الصِّرَاطَ المُستَقِيمَ صِرَاطَ الَّذِينَ أَنعَمتَ عَلَيهِمْ غَيرِ المَغضُوبِ عَلَيهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ

আর্থাৎ –

আমাদেরকে সরল পথ দেখাও, সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।

এই তিনটি আয়াতে কয়েকটি বিষয় বিশেষভাবে লক্ষণীয়। যেমন, সরল পথের হেদায়াতের জন্য যে আবেদন এ আয়াতে শিক্ষা দেয়া হয়েছে, এর আবেদনকারী যেমনিভাবে সাধারণ মানুষ, সাধারণ মুমিনগণ, তেমনি আওলিয়া, গাউস-কুতুব এবং নবী-রাসূলগণও বটে। কোরআনের শিক্ষায় স্পষ্টতঃই এ তথ্য ব্যক্ত হয়েছে যে, সৃষ্টির প্রতিটি স্তর, এমনকি প্রতিটি অণু-পরমাণু পর্যন্ত নিজ নিজ অবস্থানু্যায়ী প্রাণ ও অনুভূতির অধিকারী। স্ব-স্ব পরিমন্ডলে প্রতিটি বস্তুর বুদ্ধি-বিবেচনা রয়েছে। অবশ্য এ বুদ্ধি ও অনুভূতির তারতম্য রয়েছে। কোনটাতে তা স্পষ্ট এবং কোনটাতে নিতাস্তই অনুল্লেখ্য।

বুদ্ধি ও অনুভূতির ক্ষেত্রে এ তারতম্যের জন্যই সমগ্র সৃষ্টিজগতের মধ্যে একমাত্র মানুষ ও জ্বিন জাতিকেই শরীয়তের হুকুম-আহকামের আওতাভুক্ত। কারণ, সৃষ্টির এ দু’টি স্তরের মধ্যেই বুদ্ধি ও অনুভূতি পূর্ণ মাত্রায় দেয়া হয়েছে। কিন্তু, তাই বলে একথা বলা যাবে না যে, একমাত্র মানুষ ও জ্বিন জাতি ছাড়া সৃষ্টির অন্য কোন কিছুর মধ্যে বুদ্ধি ও অনুভূতির অস্তিত্ব নেই।[৩] কেননা, আল্লাহ্ সূরা বনী-ইসরাঈলে এরশাদ করেছেনঃ

“এমন কোন বস্তু নেই যা আল্লাহ্র প্রশংসার তসবীহ্ পাঠ করে না, কিন্তু তোমরা তাদের তসবীহ্ বুঝতে পার না।”

সুরা ফাতিহার ফজিলত: 

সূরা ফাতিহার ফজিলত অসীম। এর ফজিলত সম্পর্কে অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। এর কয়েকটি নিম্নরূপ:

1) উবাই ইবনে কাব (রাঃ) বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "আল্লাহ তুরআত ও ইঞ্জিলের কোন কিছুই আসল কুরআনের মতো নাযিল করেন নি। " এটিকে বলা হয় ‘আস-সব’উল মাচানী’ (বারবার তেলাওয়াত করা সাতটি আয়াত), যা আমার এবং আমার দাসের মধ্যে ভাগ হয়ে গেছে। আমার বান্দার জন্য সে যা চায় তাই আছে। 'নাসা শরীফ: ৩১৯

২) আবু হুরায়রা রা। রাসূল সা। তিনি বললেন, সূরা ফাতিহাহ পড়ুন। যখন কোন বান্দা বলে, আলহামদুলিল্লাহি রাবিবাল আলামীন, তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছেন। যখন তিনি বলেন, আর-রহমা-নীর রাহিম, তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার পুণ্য বর্ণনা করেছেন। চাকর যখন বলে, মালিকি ইয়ামুদ্দিন। আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার মর্যাদার বর্ণনা দিয়েছেন। বান্দা যখন বলে, ইয়াকানা’বুদু ওয়া ইয়া কানস্তাইন, আল্লাহ বলেন, এটা আমার এবং আমার বান্দার মধ্যে ব্যাপার। সুতরাং আমার বান্দার জন্য তিনি যা চান তা আছে। চাকর যখন বলে, ইহদিনাস সিরাটাল মুস্তাকিম .. (শেষ অবধি)। আল্লাহ বলেন: এগুলি আমার বান্দাদের জন্য। সুতরাং আমার বান্দার জন্য তিনি যা চান তা আছে। মুসলিম শরীফ: ৩৯৫

৩) ইবনে আব্বাস (রহঃ) বলেছেন, একবার জিব্রাইল (আ।) রাসূল (সাঃ) এর সাথে উপস্থিত ছিলেন। হঠাৎ জিব্রাইল আলাইহিস সালাম উপর থেকে একটি আওয়াজ শুনে আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন, এটি আকাশের একটি দরজা যা আগে কখনও খোলা হয়নি। একজন ফেরেশতা দরজা দিয়ে নেমে এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন, ‘তোমরা দু'টি আলোকের সুসংবাদ গ্রহণ কর। যা আপনাকে সরবরাহ করা হয়েছে। এটি আপনার পূর্বে কোন নবীকে দেওয়া হয়নি। সূরা ফাতিহা ও সূরা বাকারার এ দুটি শেষ আয়াত। মুসলিম শরীফ: ৬০৬

সূরা ফাতিহার সর্বাধিক পরিচিত নাম হ'ল 'সুরতুল ফাতিহা'। তারপরেও সূরা ফাতিহাকে তার স্থান, অবস্থান, বিষয়বস্তু, আইডিয়োম, বিষয়াদি ইত্যাদি বিবেচনায় রেখে বিভিন্ন নাম দেওয়া হয়েছে এবং প্রতিটি নামের সাথে সূরার মিল রয়েছে। এই সূরার ফজিলত ও গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে তাওফিককে সূরা আল-ফাতিহাহ মোতাবেক জীবনযাপন করার তাওফিক দান করুন। আমেন!

আল্লাহ্ সূরা আন নূরে এরশাদ করেছেনঃ

“তোমরা কি জান না যে, আস্মান-জমিনের যা কিছু রয়েছে, সকলেই আল্লাহ্র পবিত্রতা বর্ণনা ও গুণগান করে? বিশেষতঃ পাখীকুল যারা দু’পাখা বিস্তার করে শূন্যে উড়ে বেড়ায়, তাদের সকলেই স্ব-স্ব দোয়া তসবীহ্ সম্পর্কে জ্ঞাত এবং আল্লাহ্ তা’আলাও ওদের তসবীহ্ সম্পর্কে খবর রাখেন।” 

সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পাঠের ফজিলত সুমহ

সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পাঠের ফজিলত সুমহ

 সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পাঠের ফজিলত সুমহ 

بِسۡمِ اللّٰہِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ

ہُوَ اللّٰہُ  الَّذِیۡ  لَاۤ  اِلٰہَ  اِلَّا ہُوَ ۚ عٰلِمُ الۡغَیۡبِ وَ الشَّہَادَۃِ ۚ ہُوَ  الرَّحۡمٰنُ الرَّحِیۡمُ ﴿۲۲﴾ 

ہُوَ اللّٰہُ  الَّذِیۡ  لَاۤ  اِلٰہَ  اِلَّا ہُوَ ۚ اَلۡمَلِکُ الۡقُدُّوۡسُ السَّلٰمُ  الۡمُؤۡمِنُ الۡمُہَیۡمِنُ الۡعَزِیۡزُ  الۡجَبَّارُ  الۡمُتَکَبِّرُ ؕ سُبۡحٰنَ اللّٰہِ عَمَّا  یُشۡرِکُوۡنَ ﴿۲۳﴾ 

ہُوَ اللّٰہُ  الۡخَالِقُ الۡبَارِئُ  الۡمُصَوِّرُ لَہُ الۡاَسۡمَآءُ  الۡحُسۡنٰی ؕ یُسَبِّحُ لَہٗ  مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ۚ وَ ہُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ ﴿۲۴﴾

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

২২. হুওয়াল্লাহুল্লাহি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু- আলিমুল গাইবি ওয়াশশাহাদতি হুয়ার রহমানুর রহিম।

২৩. হুওয়াল্লাহুল লাজি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু- আল মালিকুল কুদ্দুসুসসালামুল মু’মিনুল মুহাইমিনুল আজিজুল জব্বারুল মুতাকব্বির। সুবহানাল্লাহ আম্মা ইউসরিকুন।

২৪. হুওয়াল্লাহুল খালিকুল বারিয়ুল মুশাবিরু লাহুল আসমাল হুসনা। ইউসাববিহু লাহু মা ফিছামাওয়াতি ওল আরদী ওহুয়াল আজিজুল হাকিম।

বিছমিল্লাহির রহমানির রহিম।

২২. তিনি আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই, তিনি অদৃশ্য ও দৃষ্টির জ্ঞান। তিনি পরম করুণাময়, পরম করুণাময়।

২৩. তিনি আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনি সর্বশক্তিমান, তিনি পবিত্র, তিনি শান্তি, তিনি সুরক্ষার ব্যবস্থা করেন, তিনি রক্ষাকারী, তিনি পরাক্রমশালী, তিনি পরাক্রমশালী; তারা যে অংশীদার করে, আল্লাহ তা'আলার পবিত্রতা ঘোষণা করুন!

২৪. তিনিই আল্লাহ, স্রষ্টা, উদ্ভাবক, শ্যাপার, তাঁরই সেরা নাম রয়েছে। আসমান ও যমীনের সমস্ত কিছুই তাঁর পবিত্রতা এবং মহিমা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।

পড়ুন ইসমে আজমের ফজিলত:

ফজিলত: 

(1) সত্তর হাজার ফেরেশতা সন্ধ্যা পর্যন্ত রহমত প্রার্থনা করবেন যিনি সকালে আউজু বিল্লাহিচামিয়িল আলিমিমিনাশ শাইতবানী ’সকালে তিনবার পড়ার পরে সূরা আল-হাশরের শেষ তিনটি আয়াত তেলাওয়াত করেন। তিনি যদি সন্ধ্যায় এটি আবার পাঠ করেন তবে তিনি সকাল অবধি এই মর্যাদা অর্জন করবেন এবং যদি তিনি মারা যান তবে তিনি একজন শহীদ মারা যাবেন।

(২) হাদীসে বলা হয়েছে, “যে ব্যক্তি সকালে আউ-যুবিলা-হাই চশমি-ইয়ালালী-মিমিনাশশাইত না রির্জি-এম 'সকালে তিনবার' তেলাওয়াত করার পরে সূরা হাশরের শেষ তিনটি আয়াত তেলাওয়াত করে, আল্লাহ তা'আলা ' আলা তাঁর জন্য সত্তর হাজার ফেরেশতা নিযুক্ত করবেন। । সন্ধ্যা অবধি তারা রহমত কামনা করবে। সেদিন সে মারা গেলে শহীদ মারা যাবে। সন্ধ্যাবেলায় যিনি এইভাবে পড়েন তিনিও সকাল পর্যন্ত এই মর্যাদা অর্জন করবেন। "(সুবহানআল্লাহ)

(৩) সূরা হাশরের শেষ তিনটি আয়াত তিলাওয়াত করার ফজিলত মিরকাল ইবনে ইয়াসার তিরমিযীতে বর্ণিত।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি সকালে "আযুবিল্লাহিসামুল আলিমি মিনাশ শাইতোওয়ানী রাজিম" তেলাওয়াত করে ৩ বার

هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيمُ

“হু আল্লা হুল্লাজী লা(আ) ইলাহা ইল্লা হু। আলিমুল গাইবী ওয়াশ শাহাদাতী হুয়ার রাহমানুর রাহীম।

هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ

হু আল্লা হুল্লাজী লা(আ) ইলাহা ইল্লা হু। আল মালিকুল কুদ্দুসুস সালামুল ম্যু মিনুল মুহাইমিনুল আজিজুল জাব্বারুল মুতাকাব্বির। ছুব হানাল্লাহী আম্মা ইউশরিকুন।

هُوَ اللَّهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ لَهُ الْأَسْمَاء الْحُسْنَى يُسَبِّحُ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ

হু আল্লাহুল খালেকুল বারিয়্যুল মুছাওরেলাহুল আছমা(আ)উল হুছনা। ইউ ছাব্বিহু লাহু মা ফিছ ছামা ওয়াতি ওয়াল আরদ্ ওয়া হুয়াল আজীজুল হাকীম।

“সুরা হাশরের সর্বশেষ তিন আয়াত পাঠ করিবে । আল্লাহ তায়ালা তাহার জন্য ৭০ হাজার ফেরেশতা নিযুক্ত করে দিবেন,তারা সন্ধ্যা পর্যন্ত পাঠকারীর জন্য রহমতের দোয়া করবে। যেদিন এই আয়াত তিনটি পাঠ করিবে সেদিন পাঠকারী মারাগেলে শহীদের মউত হাসিল করিবে। যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় এভাবে পাঠ করিবে সেও একই মর্তবা লাভ করিবে। (সুবহানআল্লাহ)

আয়াতুল্লাহ কুরসী তেলাওয়াত ফজিলত

 
আয়াতুল্লাহ কুরসী তেলাওয়াত ফজিলত
যে দোয়া পড়লে মৃত্যুর আযাব হবে পিপড়ার কামড়ের সমান। এটি পড়ে ঘুমালে সারারাত একজন ফেরেস্তা তাকে পাহারা দেন। বাড়ি থেকে বের হলে ৭০,০০০ ফেরেস্তা চর্তুদিক থেকে তাকে রক্ষা করে এবং পড়ে বাড়ি ঢুকলে বাড়িতে দারিদ্রতা প্রবেশ করতে পারেনা ।

بِسۡمِ اللّٰہِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ
اَللّٰہُ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَۚ اَلۡحَیُّ الۡقَیُّوۡمُ ۬ ۚ لَا تَاۡخُذُہٗ سِنَۃٌ وَّ لَا نَوۡمٌ ؕ لَہٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الۡاَرۡضِ ؕ مَنۡ ذَا الَّذِیۡ یَشۡفَعُ عِنۡدَہٗۤ اِلَّا بِاِذۡنِہٖ ؕ یَعۡلَمُ مَا بَیۡنَ اَیۡدِیۡہِمۡ وَ مَا خَلۡفَہُمۡ ۚ وَ لَا یُحِیۡطُوۡنَ بِشَیۡءٍ مِّنۡ عِلۡمِہٖۤ اِلَّا بِمَا شَآءَ ۚ وَسِعَ کُرۡسِیُّہُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ ۚ وَ لَا یَـُٔوۡدُہٗ حِفۡظُہُمَا ۚ وَ ہُوَ الۡعَلِیُّ الۡعَظِیۡمُ ﴿۲۵۵﴾
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা-হু ওয়াল হাইয়ুল কাইয়ূমু লা-তা’খুযুহূ ছিনাতুওঁ ওয়ালা-নাওম লাহূ মা-ফিছ ছামা-ওয়া-তি ওয়ামা-ফিল আরদি মান যাল্লাযী ইয়াশফা‘উ ‘ইনদাহূইল্লা-বিইযনিহী ইয়া‘লামু মা-বাইনা আইদীহিম ওয়ামা-খালফাহুম ওয়ালা-ইউহীতূনা বিশাইইম মিন ‘ইলমিহী ইল্লা-বিমা-শাআ ওয়াছি‘আ কুরছিইয়ুহুছ ছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদা ওয়ালা-ইয়াঊদুহু হিফজু হুমা-ওয়া হুওয়াল ‘আলিইয়ূল ‘আজীম।
তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই, তিনি চিরঞ্জীব, স্থায়ী। তন্দ্রা এবং ঘুম তাকে স্পর্শ করে না। নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে যা কিছু রয়েছে সবই তাঁরই। কে তার অনুমতি ছাড়াই তাঁর জন্য সুপারিশ করবে? তিনি জানেন যে তাদের সামনে কি আছে এবং তাদের পিছনে কী রয়েছে। তিনি তাঁর জ্ঞানের সামান্যতম পরিমাপের অধিকারী নন, তিনি যা চান তা ব্যতীত। তাঁর সিংহাসন আসমান ও যমীনকে ঘিরে রেখেছে এবং এই দু'টির সংরক্ষণই তাঁর পক্ষে বোঝা নয়। তিনিই সর্বোচ্চ ও মহান High (সুরত আল বাকারা: ২৫৫)

ফজিলতঃ

1.এটি পড়ে বাড়ি থেকে বের হলে ৭০,০০০ ফেরেস্তা চারদিক থেকে রক্ষা করে।
২. এটি পড়ে ঘরে প্রবেশ করলে দারিদ্র্য ঘরে প্রবেশ করে না।
৩. এটি পড়ে ঘুমালে সারারাত একজন দেবদূত তাকে পাহারা দেন।
৪. ফরজ নামাজের পরে যদি তা তেলাওয়াত করা হয় তবে তা আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী একটি জিনিসের দূরত্ব রয়েছে; তা হ'ল মৃত্যু। এবং মৃত্যুর আযাব এত হালকা; পিঁপড়ার কামড়ের মতো। ৫. যদি ওযুর পরে তা পাঠ করা হয় তবে আল্লাহর তার মর্যাদা 70 গুণ বাড়িয়ে দেন। (সহিহ হাদিস)

৬। জান্নাতের দরজা:

আবু উমামা রা। থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছিলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষে আয়াতুল্লাহ কুরসী তিলাওয়াত করবে, তাকে মৃত্যু ব্যতীত জান্নাতে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়ার কিছুই থাকবে না। [নাসায়ী]

৭। হযরত আলী রা। তিনি বললেন,

"আমি আমি রাসূলুল্লাহ সা.-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি নিয়মিত প্রত্যেক ফরয নামাযের পরে আয়াতুল্লাহ কুরসী তেলাওয়াত করে তার জান্নাতে প্রবেশে কেবল মৃত্যুই অন্তরায় হয়ে আছে" যে ব্যক্তি বিছানায় শুয়ে এই আয়াতটি তেলাওয়াত করবে, আল্লাহ তার বাড়িতে, প্রতিবেশীর বাড়িতে এবং আশেপাশের সমস্ত বাড়িতে শান্তি বজায় রাখবেন। [সুনান বেহাকী]

৮। মর্যাদাপূর্ণ দুর্দান্ত আয়াত:

আবু জার জন্ডুব ইবনে জানাদাহ নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল। ! কোন আয়াতটি আপনার প্রতি সবচেয়ে মর্যাদার সাথে অবতীর্ণ হয়েছে? নবী. বলেছেন, আয়াতুল্লাহ কুরসি। [নাসায়ী]

৯. উবাই ইবনে কাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত:

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উবাই বিন কাবকে জিজ্ঞাসা করলেন যে কোরআনের কোন আয়াতটি আপনার পক্ষে সবচেয়ে বড়? তিনি বললেন, (আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়ুল কাইয়ুম) তখন আল্লাহর রাসূল তাকে বুকে আঘাত করলেন এবং বললেনঃ আবুল মুনজির! এই জ্ঞানের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। [সহিহ মুসলিম]
১০. যদি সেই প্রার্থনাটি তেলাওয়াত করা হয়, তবে মৃত্যুর শাস্তি পিপড়ার কামড়ের সমান হবে একজন মুসলমানের মৃত্যু অবধি ভালো জীবনযাপন করার জন্য অনেক দোয়া রয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: মহান আল্লাহ তায়ালা আত্মাকে বলেন, বের হয়ে যাও। তিনি বলেন, "না, আমি স্বেচ্ছায় বাইরে যাব না।" আল্লাহ তায়ালা বলেন, "অনিচ্ছুক হলেও বেরিয়ে এসো"। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যখন মুমিন বান্দার আত্মা বের হয়, তখন দু'জন ফেরেশতা তার সাথে সাক্ষাত হয় (যা তা গ্রহণ করুন) এবং উভয়ই তার সাথে আরোহণ করে। তারপরে এর সুগন্ধির উল্লেখ রয়েছে। স্বর্গীয় জীবেরা বলে, “পবিত্র আত্মা পৃথিবী থেকে নেমে এসেছেন। হে আত্মা! শ্বরের শান্তি আপনার এবং আপনি যে দেহ রোপণ করেছিলেন তার উপর। "অতঃপর একজন ফেরেশতা তাকে তাঁর পালনকর্তার কাছে নিয়ে গেলেন; অতঃপর তিনি বললেনঃ তাকে শেষ বারের জন্য (অর্থাৎ কেয়ামত পর্যন্ত) নিয়ে যাও।" পক্ষান্তরে, যখন কাফেরের আত্মা বের হয়, তখন এর দুর্গন্ধ এবং অপরিষ্কারের কথা উল্লেখ করা হয়। স্বর্গের বাসিন্দারা বলে, "পৃথিবী থেকে একটি অশুচি আত্মা নেমে এসেছে।" এবং বলা হয়, "তাকে শেষ অবধি নিয়ে যাও"। হজরত আজরাইল (আ।) যখন আত্মাকে ধরতে আসবেন, মৃত্যুর আগের মুহুর্তে ঝামেলা হবে। তবে আল্লাহ তায়ালার মুমিনগণ সেই দুর্ভোগ কম পান। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন: আমরা সবাই এই সালাতকে 'আয়াতুল কুরসি' নামে জানি।